তিনি নিজে কিছু করলেন না। কিন্তু মনের ভাব প্রকাশ করলেন ব্যক্তিগত সহায়ককে দিয়ে। সেটা হল একটি ফেসবুক পোস্টঃ ‘বর্গি দেশের এক উজির পশ্চিমবঙ্গে বার বার আঘাত হানছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে সঙ্গে আছে কিছু বর্গি পেয়াদা।’ লেখক দেব সাহা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ব্যক্তিগত সহায়ক। এই পোস্টকে ঘিরে এখন তোলপাড় বিজেপি অন্দরমহল। চরম বিতর্কের মুখে পড়ে পোস্টটি পরে তুলে নেওয়া হলেও রেশ কাটেনি।
প্রশ্ন উঠছে বর্গি কে? কে আঘাত হানছে? বর্গির পেয়াদা কারা? বিজেপি’র রাজ্য দপ্তরে কান পাতলেই শোনা যাবে, এখানে কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। দিলীপ ঘনিষ্ঠরা কৈলাস বিরোধী। তাই তাঁর জন্যই এইসব ঘটছে। তিনিই এইসব ঘটাচ্ছেন। তাঁর থেকেই বাংলা তথা রাজ্য বিজেপিতে আঘাত নেমে আসছে। আর এই বর্গির পেয়াদা হলেন মুকুল রায়। কারণ তাঁকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। মুকুল ঘনিষ্ঠদের বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে।
বিজেপির সাংগঠনিক রদবদলে আকস্মিক ভাবে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরানোর সঙ্গে সঙ্গেই দলের গোষ্ঠী রাজনীতির আগুনে ঘৃতাহুতি হয়েছে। রব উঠেছে দিলীপবাবুর ঘনিষ্ঠ ওই আরএসএস নেতাকে সরানোর অর্থ আসলে তাঁরই ডানা ছাঁটা। দিলীপবাবুকে রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে, তেমন কথাও হাওয়ায় ঘুরছে। যদিও এ দিন পর্যন্ত দিলীপবাবু থেকে শুরু করে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় পর্যন্ত সকলেই এ ধরনের কোনও সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। দিলীপবাবু, মুকুলবাবু দু’জনেই আলাদা ভাবে বলেন, এ ধরনের কোনও সম্ভাবনার কথা তাঁদের জানা নেই। রাজ্য দলে এক জন কার্যকরী সভাপতি নিয়োগ করা হতে পারে, সেই গুঞ্জন অবশ্য এখনও জারি আছে। দলের অনেকের মতে, যদি আদৌ তা হয়, তবে সেটিও হবে দিলীপবাবুর ডানা ছাঁটার আর একটি ধাপ। সে ক্ষেত্রে তাঁকে সরাসরি পদচ্যুত করার প্রয়োজনও কমবে। অর্থাৎ ‘ক্ষমতা খর্ব’ করে দিয়ে তাঁকে পদেই রাখা হবে।
যদিও ওই পোস্টের পর দিলীপবাবুর সাফাই, ‘দেব ছোট ছেলে। রাজনীতিতে অপরিণত। এত ভেবে ও কিছু লেখেনি। তবে এই সব নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে দেখে ও পোস্টটা মুছে দিয়েছে।’ দিলীপবাবু কেন সাফাই দিতে গেলেন এই পোস্টের তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। দিলীপবাবু এই পোস্টটি করেননি। করেছেন তাঁর আপ্ত সহায়ক। কিন্তু দিলীপবাবুর মনের ভাব এই পোস্টে প্রকাশ পেয়েছে। এখন দেখার দলের অন্দরের কোন্দল কোন পর্যায়ে যায়।