বিভিন্ন প্রকল্প এবং পরিবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থায় স্কুল ছুট পড়ুয়ার সংখ্যা কমানোয় দেশের মধ্যে শীর্ষে উঠে এল বাংলা। অ্যানুয়াল স্টেট অফ এডুকেশন রিপোর্ট ২০২০-তে প্রকাশ পেয়েছে এই তথ্য।
প্রতি বছর বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা করে এএসইআর। এ বছর এএসইআর ২৬ টি রাজ্যের ৫৮৪ টি জেলার ১৬, ৯৭৪ টি গ্রামের ৫২, ২২৭ টি বাড়িতে ঘুরে সমীক্ষা চালিয়েছে। সেখান থেকেই উঠে এসেছে বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য সাফল্যের খতিয়ান।
এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০২০ শিক্ষাবর্ষে স্কুলছুট পড়ুয়ার সংখ্যা ৩.৩ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১.৫ শতাংশ। যা জাতীয় স্তরে স্কুল ছুটদের সংখ্যার (৪ শতাংশ থেকে ৫.৫ শতাংশ) থেকেও কম। কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে স্কুল ছুট পড়ুয়াদের সংখ্যা যথাক্রমে ১১.৩, ১৪ এবং ১৪.৯ শতাংশ।
এমনকী রাজ্যের প্রায় সমস্ত পড়ুয়ার হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার কাজে সফল বাংলার মমতা সরকার। যা গড়ে ৯৯.৭ শতাংশ। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মতো বড় রাজ্যগুলির থেকেও এই বিষয়ে ভালো কাজ করেছে বাংলা। পড়ুয়াদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে এইসব রাজ্যে শতকরা হার যথাক্রমে ৭৯.৬, ৬০.৪, ৯৫, ৩৪.৬ এবং ৮০.৮ শতাংশ।
করোনা আবহে লকডাউনের মধ্যেও বাংলার পড়ুয়াদের পঠন-পাঠনে নূন্যতম বিঘ্ন ঘটেনি বলেও জানাচ্ছে সমীক্ষা। স্কুল বন্ধ থাকলেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। সরকারি সহায়তায় স্থানীয়দের উদ্যোগে চলেছে ‘লকডাউন স্কুল’। রাজ্যের প্রায় ১৬,০০০ শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৫লাখ শিক্ষার্থী এই স্কুলে অংশ নিয়েছে। মূলত সমাজের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছে মমতা সরকার।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৈরি করেছেন একের পর এক প্রকল্প। সিলেবাস পাল্টে এসেছে ২৯৬ টি নতুন বই। যা বদলে দিয়েছে রাজ্যে স্কুল শিক্ষার গোটা ছবিটাই। কিউএস ইন্ডিয়া র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছে বাংলার দুই বিশ্ববিদ্যালয়৷ প্রতি গ্রামে খোলা হয়েছে বিদ্যালয়। এবার তারই সুফল ঘরে তুলছে বাংলা।