করোনার ধাক্কা সামলে চীনের পাশাপাশি ক্রমশ বাংলাদেশের অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়ে উঠছে। পুরো বছরের প্রকৃত জিডিপি-র নিরিখে এমনই মনে করছেন আইএমএফের অর্থনীতিবিদরা। এশিয়ার মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ভারতের অর্থনীতির। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, চলতি আর্থিক বছরে ভারতের অর্থনীতি সংকুচিত হবে ১০.৩ শতাংশ। আইএমএফের হিসাবমতো বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, চীন, নেপাল, পাকিস্তান ও আরও পাঁচটি দেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়বে ভারতের অর্থনীতি।
অর্থনীতির এই হাল নিয়ে সরকারকে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের প্রাক্তন প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি এখন যেখানে পৌঁছেছে, কয়েক বছর আগেও কেউ ভাবতে পারেনি। তার জন্য আংশিকভাবে দায়ী কোভিড। এই অবস্থা থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। তথ্যকে অস্বীকার করলে চলবে না। যদি ভুল হয়ে থাকে, স্বীকার করতে হবে। ভুল সংশোধনের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ শুনতে হবে।’
গত সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন অর্থনীতিবিদ জেফ্রি ডি সাচস মন্তব্য করেন, করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে ভারত এখনও পর্যন্ত যে উদ্যোগ নিয়েছে, আগামী দিনে তার ডবল উদ্যোগ নিতে হবে। নইলে অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের সব চেষ্টাই হবে হবে ব্যর্থ।
সাচসের বক্তব্য, করোনার মোকাবিলায় শুধু ওষুধ দিয়ে কাজ হবে না। সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে সকলেই মাস্ক পরে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে। যে কোনও জমায়েত নিষিদ্ধ করতে হবে। আরও বেশি বেশি টেস্ট করতে হবে। কীভাবে রোগী সংক্রমিত হয়েছেন তাও খুঁজে বার করতে হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় বাড়াতে হবে ব্যয়বরাদ্দ। নাহলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে ভারত। কোভিড রোগীর সংখ্যা হু হু করে বেড়ে যাবে।
তাঁর কথায়, ‘ভারত নানা বিধিনিষেধ শিথিল করে দিচ্ছে। অর্থনীতি যাতে চাঙ্গা হয়ে ওঠে, সেজন্যই কড়াকড়ি রদ করা হচ্ছে। কিন্তু অতিমহামারী নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সেই উদ্দেশ্য সফল হবে কিনা সন্দেহ আছে।’ পরে অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমার আশঙ্কা, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে তার পরিণাম হবে ভয়ঙ্কর। এখনও ভারতে মৃত্যুহার খুব বেশি নয়। কিন্তু আচমকা যদি সংক্রমণ হু হু করে বেড়ে যায়, তাহলে মৃত্যুহারও বাড়বে বহুগুণ। তখন ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।’