বুধবার কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণের জেরে বিপর্যস্ত অবস্থা তেলেঙ্গানার। বর্ষণজনিত একাধিক দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে। এক-একটা রাস্তা যেন ভিন্ন চেহারার নদী। জমা জলের প্রবল স্রোত। আস্ত গাড়িও জলে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত। সেগুলি যে রাস্তা, না বললে দেখে বোঝার উপায় নেই। বৃষ্টিতে ঘরবন্দী জীবনেও স্বস্তি নেই। ঘরদোর-সংসার ভাসছে জলে। খড়কুটোর মতো জলে ভেসে যাচ্ছে ভাতের হাঁড়ি। সংসারের টুকিটাকি। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জীবন থমকে তেলেঙ্গানায়। হাজার হাজার একর চাষজমি জলে ডুবে।
শুধু হায়দ্রাবাদেই এ পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মৃতের সারিতে দু-মাসের একটি শিশুও রয়েছে। তেলেঙ্গানার নিচু এলাকাগুল সম্পূর্ণ ভাবে জলে নিমজ্জিত। রাতভর বৃষ্টির জেরে একটা বড় পাঁচিল ভেঙে ১০টি ঘর ভেঙেছে। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। মৃতেরা ওই ঘর-পরিবারের সদস্য। দিনে কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি ধরলেও রাত থেকে ফের মুষলধারে শুরু হয় বর্ষণ।
জলের তোড়ে একজন ভেসে যাচ্ছে এমন ছবিও সামনে এসেছে। অন্যেরা অসহায়ের মতো সে-ছবি দেখছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা মিলে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন।
হায়দ্রাবাদের বানজার হিলস এলাকায় বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে বছর ৪৯-এর এক ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। মৃতের প্রাকৃতিক চিকিত্সার একটি ক্লিনিক ছিল। মেঝের জমা জল বের করতে গিয়ে তিনি বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের খোঁজ নেই। পুলিশ তাঁদের খুঁজে বেড়াচ্ছে।
ঝড়জলে বিপর্যয়ের আশঙ্কায় তেলেঙ্গানায় একাধিক অঞ্চলে বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তেলেঙ্গানার নগর উন্নয়ন মন্ত্রী কেটি রামারাও তেলেঙ্গানা স্টেট সাদার্ন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বৈঠক করেন। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুত্ সংযোগ দিতে বলেন মন্ত্রী।
ত্রাণকাজ এবং উদ্ধারে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, এনডিআরএফ ছাড়াও সেনার সাহায্য চেয়েছে তেলেঙ্গানা সরকার। হায়দ্রাবাদ এবং রঙ্গরেড্ডি জেলার বন্যার্ত এলাকা থেকে ইতিমধ্যে এক হাজারের বেশি জলবন্দীকে উদ্ধার করেছে এনডিআরএফের টিম। সেনাও উদ্ধারকাজ শুরু করে দিয়েছে। সরকারি দফতরে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বেসরকারি ইনস্টিটিউটগুলিও দু-দিনের জন্য বন্ধ। বৃহস্পতিবার আর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই আশ্বস্ত করেছে আবহাওয়া দফতর।