জিএসটি ক্ষতিপূরণের অর্থ মেটানো নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত জিএসটি পরিষদের ৪২তম রাউন্ডের দ্বিতীয় পর্বের বৈঠকেও মিটল না। কেন্দ্র জিএসটি ক্ষতিপূরণের বিকল্প রাস্তা হিসাবে রাজ্যগুলিকে বাজার থেকে ঋণ নিতে বলেছিল। এর আগের বৈঠকেও বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি কেন্দ্রের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। সোমবারের বৈঠকেও সেই বিরোধ অব্যাহত ছিল। বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানান, কোনও ঐকমত্যে পৌঁছনো যায়নি।
জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যগুলির কেন্দ্রের কাছে তিন লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া। সেস বসিয়েও এই টাকা কেন্দ্র তুলতে পারেনি। বিকল্প হিসাবে কেন্দ্রের প্রস্তাব রাজ্যগুলি বাজার থেকে সেই টাকা আপাতত ঋণ নিক। নির্মলা এদিনও বৈঠকে জানান, কেন্দ্রের পক্ষে এখন বাজার থেকে ঋণ সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তাতে ঋণের খরচ বাড়বে।বৈঠকের আগেই এই প্রসঙ্গে আশঙ্কা ব্যক্ত করে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র টুইটারে লেখেন, ‘আজ নির্মলা সীতারমণ মোদীর দেখানো রাস্তায় সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে ব্যবহার করে ১০টি রাজ্যের মতামত অগ্রাহ্য করবে কি-না সেটাই দেখার। যদি তিনি তা করেন, তা হলে সেটা ইতিমধ্যেই ভেন্টিলেশনে চলে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে মৃত্যুঘাত করবে।’ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘এই দিনটি কি ভারতীয় গণতন্ত্রের একটি কালো দিন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে?’
জিএসটি পরিষদে ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিরোধ না মিটলেও সোমবার দুপুরে বৈঠকের আগে রাজ্যগুলির জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ করেন অর্থমন্ত্রী। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতেই এই উদ্যোগ বলে জানান তিনি। ঘোষণা করেন, ১২ হাজার কোটি টাকার মূলধন ব্যয়ের জন্য রাজ্যগুলি ৫০ বছরের মেয়াদে ঋণ নিলে কোনও সুদ লাগবে না। তাঁর কথায়, ‘কেন্দ্র সরকার রাজ্যগুলিকে ৫০ বছরের মেয়াদে ১২ হাজার কোটি টাকা মূলধনী ব্যয়ের জন্য একটি বিশেষ সুদমুক্ত ঋণ দেবে। রাজ্যগুলিকে এই ঋণের টাকা দেওয়া হবে দুটি পর্যায়ে। প্রথম পর্যায়ের ৫০ শতাংশ ব্যয়ের পরে দেওয়া হবে দ্বিতীয় ভাগের টাকা। ২০২১ সালের মার্চের মধ্যে রাজ্যগুলিকে এই টাকা ব্যয় করতে হবে।’ রাজ্যগুলি অবশ্য কেন্দ্রের এই ঘোষণায় বিশেষ আশার আলো দেখছে না। জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া তাদের কাছে অনেক বড় ইস্যু।