গত বছরের ৫ আগস্ট উপত্যকা থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের দিন থেকেই বন্দী তিনি। অবশেষে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে ‘আটকে’ রাখা নিয়ে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে কার্যত মুখ পুড়ল জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের। এদিন বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কাউলের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ সরকারি আইনজীবীর সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কাছে জানতে চান, ‘একজন নাগরিককে কতদিন ধরে আটক রাখা যায়? মেহবুবা মুফতিকে কতদিন আটক রাখার পরিকল্পনা রয়েছে?’ সরকারি আইনজীবী জবাব দেওয়ার জন্য সময় চাইলে আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত শুনানি স্থগিত রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
গত বছরের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের দিনেই নিরাপত্তার ধুয়ো তুলে রাজ্যের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতিকে আটক করে প্রশাসন। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক অভিসন্ধি চরিতার্থ করতে বিজেপি বাদে অন্য দলের নেতাদেরও আটক করা হয়। পাবলিক সেফটি আইন কিংবা জন নিরাপত্তা আইনেই উপত্যকার বিজেপি বিরোধী নেতাদের ‘বন্দী’ করার মতো লজ্জাজনক পথে হাঁটে স্থানীয় প্রশাসন। যদিও গত কয়েক মাস আগেই প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লা ও ওমর আবদুল্লা সহ বেশ কয়েকজন রাজনেতিক নেতাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে আটকে রাখা হয় মেহবুবাকে।
আর তারপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি জন নিরাপত্তা আইনে মেহবুবাকে আরও এক বছরের জন্য আটক রাখার নির্দেশিকা জারি করে সরকার। বিনা বিচারে তাঁকে আটকে রাখায় শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন মেহবুবা কন্যা ইলতিজা মেহবুবা। সেই আবেদনের শুনানিতে এদিন বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কাউল কিছুটা ক্ষুব্ধ কণ্ঠেই জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে বলেন, ‘আপনি দুটি বিষয়ে স্পষ্টভাবে আমাদের জানান। এক, একজন সাধারণ নাগরিকের সর্বোচ্চ কতদিন আটক রাখা যায়? দুই, জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে কতদিন আটকে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে?’ বিচারপতির কথায় কিছুটা হতচকিত হয়ে পড়েন সলিসিটর জেনারেল। এরপরই মেহবুবাকে আটকে রাখা নিয়ে আগে আদালতে দাখিল করা হলফনামা সংশোধনের আর্জি জানান তিনি। যা মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি।