কথায় আছে চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়! এই প্রবাদ পুরোপুরি খেটে যায় রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের কর্ণধার অনিল আম্বানির ক্ষেত্রে। যিনি কিনা একসময় ছিলেন বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি। কালের ফেরে আজ তাঁর দেউলিয়া অবস্থা। সব কোম্পানি বন্ধ। বন্ধ রোজগারের সব রাস্তাও।পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গিন যে সামান্য উকিলের খরচ মেটাতে তাঁকে নিজের গয়না বিক্রি করতে হচ্ছে। সম্প্রতি ব্রিটেনের এক আদালতে এমনটাই জানিয়েছেন এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির মানে মুকেশ আম্বানির ভাই।
সূত্রের খবর, আদালতে অনিল আম্বানি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তাঁর তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও সম্পত্তি নেই। একটিমাত্র গাড়ির মালিক তিনি। এমনকী, জীবনধারণের জন্যও তিনি স্ত্রী-সন্তানের উপর নির্ভরশীল। শুধু তাই নয়, একসময়ের প্রথম সারির শিল্পপতি নাকি এখন একজন সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন করেন। আদালতে তিনি বলেন,”আমার জীবনযাত্রা খুব সাধারণ। এখন আমার খরচ স্ত্রী এবং পরিবার বহন করে। এমনকি আমার আইনি খরচও গয়না বিক্রি করে শোধ করেছি।” রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের কর্ণধারের দাবি, তিনি গয়না বেচে যে ৯ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন সেটাও শেষ। এখন আরও খরচ করতে হলে যৎসামান্য যা সম্পত্তি আছে, সেটাও বেচে দিতে হবে তাঁকে।
চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড কমার্সিয়াল ব্যাংক অব চায়না এবং এক্সিম ব্যাংক অব চায়না দাবি করছে, আম্বানির সংস্থাকে তারা ঋণ বাবদ কয়েক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এই ঋণগুলি নাকি অনিল আম্বানি নিয়েছেন ব্যক্তিগত গ্যারান্টিতে। কিন্তু, ধীরে ধীরে আম্বানির ব্যবসায় ক্ষতি হতে থাকায় এই ব্যাংকগুলির ঋণ তিনি মেটাতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ব্যাংকগুলি একই সঙ্গে ব্রিটেন এবং ভারতের আদালতে অনিলের বিরুদ্ধে মামলা করে। ব্রিটেনের সেই আদালত আম্বানিকে চিনের তিনটি ব্যাংকের প্রায় ৫ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা ঋণ শোধ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু অনিলের এখন ‘নুন আনতে পান্তা ফুরনো’র অবস্থা। জানিয়ে দিয়েছেন, এই মুহূর্তে ব্যাংকগুলির ঋণ পরিশোধ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। যা শুনে তাজ্জব বনে যায় আদালত। অনিলকে তাঁর সব সব সম্পত্তির হিসেবে নিকেশের একটা হলফনামা জমা দিতে বলা হয়।