ক্রমশ ভারত সরকারের জন্য মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদী নাগা সংগঠন এনএসসিএন (আইএম)। ২০১৫ সালে কেন্দ্রের সঙ্গে শান্তিচুক্তির পর মাঝখানে কয়েকটা বছর কিছুটা শান্ত থাকলেও, ফের স্বমহিমায় ধরা দিয়েছে তাঁরা। বিচ্ছিন্নতাবাদী নাগা সংগঠনটির অভিযোগ, ভারত সরকার ৫ বছর আগের চুক্তিতে তাঁদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ করছে না। পৃথক পতাকা এবং পৃথক সংবিধানের শর্ত না মানলে তাঁদের পক্ষে ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি করা সম্ভব নয়।
নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, আসাম ও মায়ানমারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে নাগা স্বাধীনভূমি বা ‘নাগালিম’ গড়ার ডাক বহুদিনের৷ এই দাবিতে অনেক দিন ধরেই জঙ্গী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএন৷ সংগঠনটি দু’ভাগ হয়ে যাওয়ার পর মুইভা গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে কেন্দ্র৷ কিন্তু সমস্ত আলোচনার থমকে আছে এনএসসিএন(আইএম)-এর দুটি দাবির উপর। পৃথক পতাকা এবং পৃথক সংবিধান। যা কিছুতেই মানতে নারাজ দিল্লী।
২০১৫ সালে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটির সঙ্গে শান্তিচুক্তি করে মোদী সরকার। তারপর এই সংগঠনটি জঙ্গী আন্দোলন প্রত্যাহারেও রাজি হয়। কিন্তু এবছর স্বাধীনতা দিবসের আগে আরও একবার নিজেদের পুরনো দাবিতে সরব হন এনএসসিএন (আইএম) নেতা থুইঙ্গালাং মুইভা। তাঁর দাবি ছিল, ২০১৫ সালে যে চুক্তি হয়েছিল তাতে ভারত সরকার নাগাল্যান্ডের পৃথক জাতীয় পতাকা এবং আলাদা সংবিধানের দাবিতে স্বীকৃতি দেয়। এমনকী দুই দেশের পৃথক সহাবস্থানের কথাও বলা হয়। হঠাত মুইভার এভাবে সক্রিয় হয়ে যাওয়াটা চিন্তায় ফেলে কেন্দ্রকে। নাগাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কেন্দ্রের তরফে নিয়োগ করা হয় খোদ ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর অরবিন্দ কুমারকে। এর আগে যিনি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিলেন সেই আর এন রবিকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধান এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য এই মুহূর্তে দিল্লীতে থুইঙ্গালাং মুইভা ও এনএসসিএন(আইএম)-এর আরও কয়েকজন নেতা। এরই মধ্যে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিল নাগা সংগঠনটি। শুক্রবার নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে জয়েন্ট কাউন্সিলের বৈঠকের পর সংগঠনটির তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভারত সরকার যতদিন না নাগাদের পৃথক সংবিধান এবং পতাকার দাবি মানছে, ততদিন আলোচনা ফলপ্রসু হবে না। নাগারা বলছে, কেন্দ্রের উচিত ২০১৫ সালে হওয়া চুক্তি এবার সম্পন্ন করা। অরুণাচল সীমান্তে চীনা অশান্তির মধ্যে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের এই বাড়বাড়ন্ত বেশ চিন্তায় রাখবে কেন্দ্রকে।