হাতে আর বেশিদিন বাকি নেই। এদিকে মাথার ওপর ঝুলছে করোনা ভাইরাসের খাঁড়া। যার জেরে রাজ্য তথা গোটা দেশে সেই মার্চ মাস থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত বহু উত্সবই পালিত হয়েছে নামমাত্র আয়োজনে। এই পরিস্থিতিতে এ বছর বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সব দুর্গাপুজো কীভাবে মানুষের সুরক্ষা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজিত হবে তা নিয়েই চলছে ব্রেনস্টর্মিং। নভেল করোনাভাইরাসের থাবা বাঁচিয়ে কীভাবে উত্সবের আনন্দে মানুষকে সামিল করা যায় তা নিয়েই ভাবনাচিন্তা করছেন পুজো কমিটির কর্তারা। শহরের সব পুজোর কমিটির মাথায় রয়েছে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব। তারাই জানিয়েছে শহর এবং শহরতলির একাধিক বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলি ইতোমধ্যে পুজোর আয়োজন শুরু করে দিয়েছে। পুজো বাতিলের কোনও প্রশ্নই উঠছে না।
প্রসঙ্গত, করোনার থাবায় ব্যাপক পরিমাণে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে মানুষের। সেই সঙ্গে মনে জমাট বেঁধে রয়েছে সংক্রমণের ভয়। তাই অনেকেই ভেবেছিলেন, এ বছর হয়তো ছোট ছোট পুজোগুলি বন্ধ রাখতে পারেন আয়োজকরা। কিন্তু তা হচ্ছে না। ফোরাম ফর দুর্গোৎসব-এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু জানিয়েছেন, ‘এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমরা একটা কথাই বলতে পারি, প্রতি বছর যেমন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট বড় নানা পুজো হয়ে থাকে এবারও তার কোনও ব্যতিক্রম হবে না। তবে বেশ কিছু পুজো কমিটি সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাদ দিতে পারেন বাড়তি কিছু আয়োজন। দুর্গাপুজো আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব। প্রতিটি পুজো কমিটি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সব নির্দেশিকা মেনে চলছে।’
ফোরাম ফর দুর্গোৎসব-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শুধুমাত্র কলকাতা শহরজুড়েই প্রায় সাড়ে তিন হাজার দুর্গাপুজো হয়ে থাকে। এর থেকে সরাসরি এবং ঘুরপথে রোজগার হয় কয়েক লাখ মানুষের। এই পুজোর দিকে তাকিয়েই সারা বছর দিন কাটে বহু সংসারের। কমিটিগুলি বোঝেন, পুজো সম্পূর্ণ বাতিল করে দিলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন অসংখ্য মানুষ। ফোরামের সহ সম্পাদক তুষার সাহা জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে প্রতিমাশিল্পী, ঢাকী, ডেকরেটররা আসেন। দুর্গাপুজো থেকে যা রোজগার হয় তা দিয়ে অন্তত পাঁচ মাস সংসার চলে যায় তাঁদের। দুর্গাপুজো বন্ধ হলে এঁরা অথৈ জলে পড়বেন।’