চীন-ভারত সীমান্তে মধ্যে ফের তৈরি হয়েছে উত্তেজনার পরিবেশ। আর এরমধ্যেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে লাদাখ সফরে গেলেন সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নারাভানে। বাহিনীর প্রস্তুতি ও রিজিয়নের পরিস্থিতি তদারক করতেই দু দিনের সফরে গিয়েছেন তিনি। অনুপ্রবেশ ঘিরে একে অপরকে দোষ চাপানোর পালা, তার মধ্যেই শান্তি বজায় রাখার বার্তাও চলছে। লাদাখ সীমান্ত ফের তেতে ওঠার পর ইন্দো-চীন সম্পর্কের সুর অনেকটা এমনই।
তবে এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তে তৎপরতা কমছে না। বরং ২৯ আগস্ট রাতে এবং ৩১ আগস্ট লাদাখ সীমান্তে চীনা আগ্রাসনের পর প্যাংগং লেক সংলগ্ন এলাকার পাশাপাশি অরুণাচল সীমান্তেও সেনা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সতর্কবার্তা মেনে ইন্দো-চীন, ইন্দো-নেপাল এবং ইন্দো-ভুটান- প্রতিটি সীমান্তেই নজরদারি ও সতর্কতা আগের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট রাতে লাদাখে প্যাংগং লেকের দক্ষিণাংশে চীনা সেনা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ভারতের। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তৎপরতায় সে অনুপ্রবেশ আটকে দেওয়া গিয়েছে। সোমবারও একই চেষ্টা চলে বলে অভিযোগ নয়াদিল্লীর। চীনের অবশ্য দাবি, তাঁরা নয়, বরং ভারতীয় সেনাই সোমবার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে চীনের ভূখণ্ডে ঢুকেছিল। দাবি-পাল্টা দাবি নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থাকলেও এই অশান্তিতে ভারতীয় কোনও সেনা যে শহিদ হননি, সে কথা চীনই এ দিন নিশ্চিত করেছে।
চীনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বুধবার বলেন, “যত দূর আমি জানি, সীমান্তে কোনও ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়নি।” এরই পাশাপাশি তাঁর দাবি, চীনা বাহিনী যথেষ্ট সংযমের পরিচয় দিয়ে কূটনৈতিক ও সেনাস্তরে আলোচনায় ভরসা রেখেছে। তবে দোষারোপের মাঝেও হুয়ার বার্তা, “আশা করি, সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে ভারত-চীন, দু’পক্ষই ঐকমত্য ও বোঝাপড়ার পথে এগোবে।”
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মুখেও শোনা গিয়েছে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার বার্তা। মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো চিনের বিরুদ্ধে বুলিংয়ের অভিযোগ আনলেও শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদী। তাঁর বক্তব্য, ‘ইন্দো-চীন সীমান্তে যে পরিস্থিতি চলছে, তার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে বলেই আশা করি। তবে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ক্রমাগত প্রতিবেশী দেশগুলিকে বুলিং করার পথ নিচ্ছে, যা মেনে নেওয়া যায় না।”