সমস্ত প্রার্থনা-পূজার্চ্চনাকে মিথ্যে প্রমাণ করে আজ চলে গেলেন গ্রামের ছেলে প্রণব মুখোপাধ্যায় ওরফে পল্টু। দুঃসংবাদ পাওয়ার পর থেকেই যেন থমকে গিয়েছে বীরভূমের মিরিটি ও কীর্ণাহার। চলতি বছরের পুজোয় আর তাঁর কণ্ঠে শোনা যাবে চণ্ডীপাঠ। চোখের দেখাও দেখতে পাওয়া যাবে না একসময় ভারতের ফার্স্ট পার্সন, রাইসিনা হিলসের নিবাসীকে। সেকথা ভেবেই চোখের জলে ভাসছেন গ্রামবাসীরা।
সারা বছর কাজের ব্যস্ততায় গ্রামের বাড়িতে ফেরার সময় পেতেন না। কিন্তু দুর্গাপুজোর সময় সমস্ত ব্যর্থতাকে সরিয়ে তিনি হয়ে উঠতেন আদ্যন্ত বাঙালি সন্তান। তাই তো প্রতি বছর সে সময় মিরিটির বাড়িতে আসতেন। চারদিন গ্রামের বাড়িতেই কাটাতেন। রাতে থাকতেন পাশের পরোটা গ্রামে দিদির বাড়িতে। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের কথা তিনি শুনতেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতেন। মিরিটি গ্রামে পুজো শেষে বাড়ির উঠোনে পাতা হত একটি ইজি চেয়ার। সেখানে বসে গ্রামের প্রতিটি মানুষের অভাব, অভিযোগ শুনতেন।
পুজোর সময় নিজে অষ্টমীর দিন চণ্ডীপাঠ করতেন। দিদির বাড়িতে দোতলায় তাঁর জন্য একটি ঘর নির্দিষ্ট থাকত। ঘরে ছিল একটি ছোট্ট লাইব্রেরি। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বই রাখা থাকত। কারণ প্রণববাবু বাঁটুল দ্য গ্রেট থেকে হাঁদাভোঁদা, সব ধরনের কমিকস বই পড়তে ভালবাসতেন। প্রণববাবুর দীর্ঘদিনের সহকারী রবি চট্টরাজ বলেন, “আমি আমার অবিভাবক হারালাম। তিনি বীরভূমের মানুষ এবং এই জেলার উন্নয়নের কথা সব সময় ভাবতেন। গ্রামের প্রতিটি মানুষের নাম জানতেন, গ্রামে এলে তিনি তাদের খোঁজ নিতেন।”