বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার দ্বারিয়াপুর গ্রাম। সেই গ্রামেরই মুখার্জীপাড়ার বাসিন্দা তপন মুখার্জী দিন চারেক ধরেই জ্বর ও প্রবল শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। গত রবিবার দুপুরের দিকে হঠাৎই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে তপনবাবুর স্ত্রী ডলিদেবী গাড়ি ভাড়া করে তাঁকে চিকিৎসার জন্য গুসকরায় নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা দেন। কিন্তু মাঝপথেই তপনবাবুর মৃত্যু হয়। তখন গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে চলে আসেন গ্রামে।
এদিকে, তপনবাবুর মৃত্যুর ঘটনা জানাজানি হতেই গ্রামবাসীরা ধরে নেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গিয়েছেন। তাই তাঁর সৎকারের জন্য সেভাবে এগিয়ে আসেননি কেউ। শেষে গ্রামের বাসিন্দা জনাপাঁচেক যুবক বৃদ্ধের দেহ একটি ভ্যানে চাপিয়ে শ্মশান অবধি নিয়ে যান। সঙ্গে যান সত্তরোর্ধ ওই বৃদ্ধের ছোট মেয়ে ও দু-একজন আত্মীয়। বৃদ্ধের মুখাগ্নির করার জন্যই শ্মশানে যান তাঁরা। কিন্তু গুজব ছড়িয়েছিল করোনায় মৃত্যু হয়েছে তপনবাবুর। তাই আতঙ্কে কোনও পুরোহিতকেও পাননি তাঁরা, যিনি মুখাগ্নি করার আগে মন্ত্র পড়ে দেবেন।
শেষ অবধি ফোনেই মুখাগ্নির মন্ত্রপাঠ সারলেন এক পুরোহিত। আর মোবাইল ফোন কানে রেখে বাবার মুখাগ্নি করলেন মেয়ে। এরপর বৃদ্ধর ছোট মেয়ে রুনু মুখার্জী দে বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই বাবার সুগার ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল। তারপর রবিবার বাবার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর করোনা আতঙ্কে পুরোহিত শ্মশানে যাননি। ফলে উনি ফোনেই মন্ত্রপাঠ করেন। আর তাই শুনে শুনে আমিও সেই মন্ত্র পড়ে বাবার মুখাগ্নি করি।’’ তবে রুনুদেবীর দাবি, করোনায় তাঁর বাবার মৃত্যু হয়নি এ ব্যাপারে তাঁরা একদম নিশ্চিত।