মারণ ভাইরাসের কবলে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন করোনা-যোদ্ধারাই। দেশের নানা প্রান্ত থেকেই কোভিড সংক্রমণে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের মৃত্যুর খবর আসছে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, দেশজুড়ে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণে এ যাবৎ ১৯৬ জন ডাক্তারের মৃত্যু হয়েছে। অথচ জুলাই মাসের মাঝামাঝি এই সংখ্যাই ছিল একশো জনের কম।
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী ডাক্তারদের শরীরেই সংক্রমণ বেশি ধরা পড়ছে। মুম্বই, দিল্লী, ইন্দোর থেকে গত কয়েকমাসে একের পর এক ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের মৃত্যুর খবর এসেছে।
করোনা সংক্রমণে ডাক্তার মৃত্যুর খবর আসছে পশ্চিমবঙ্গ থেকেও। কলকাতার দুই অভিজ্ঞ ডাক্তারের মৃত্যু হয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণে। গত মাসে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে করোনা সংক্রমণে প্রাণ হারান কলকাতা মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিএমআরআই) জেনারেল মেডিসিন বিভাগের প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার তরুণকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তার আগে কলকাতার আরও এক স্বনামধন্য ডাক্তার অভিজিৎ বসুর মৃত্যু হয় ভাইরাসের সংক্রমণে। তিনি ছিলেন বাংলার প্রতিষ্ঠিত ক্যানসার চিকিৎসক।
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ডাক্তার রাজন শর্মা বলেছেন, নিজেদের পরিবার-পরিজন ছেড়ে ডাক্তাররা দিবারাত্র হাসপাতালে মারণ ভাইরাসের মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। করোনা রোগীদের ওয়ার্ডে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাচ্ছেন। তাঁদের সুরক্ষা সবচেয়ে আগে দরকার।
আইএমএ জানাচ্ছে, দেশজুড়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করছেন সাড়ে তিন লাখের বেশি ডাক্তার। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল, নার্সিহোম, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা। সব হাসপাতাল ও নার্সিংহোমেই ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সুরক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইএমএ জানিয়েছে, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।