৫০০ বছরের অধিক অপেক্ষা। দীর্ঘ আইনি লড়াই। সাধু-সন্তদের বলিদান। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান। ‘মন্দির ওহি বান রাহা হে’। স্বাভাবিকভাবেই খুশি দেশের এবং বিশেষত অযোধ্যার সাধু-সন্তরা। আর সকাল থেকেই সেই আনন্দ চোখে পড়ল অযোধ্যাতে। প্রধানমন্ত্রীর হাতে রাম মন্দিরের শিলান্যাস হচ্ছে। কড়া নিরাপত্তা সারা অযোধ্যা জুড়ে। সংবাদমাধ্যমের অনুমতি সরযূ ঘাট পর্যন্তই। সেই সরযূ নদীর তীরে যেতেই চোখে পড়ল সাধু-সন্তদের ভীড়। সকলেই উচ্ছসিত। রীতিমতো গান-বাজনা করে তারা আজকের দিনটিকে উৎসবের মতো পালন করছে। কিন্তু এই উচ্ছ্বাস বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সামাজিক দূরত্ব বিধির। নদীর ধারে তাকিয়ে দেখা গেল, সারে সারে সাধু-সন্তরা একে অপরের প্রায় গা ঘেঁসেই দাঁড়িয়ে আছেন। ন্যূনতম সামাজিক দুরত্বের বালাই পর্যন্ত নেই।
একদিকে যেমন দেখতে পেলাম অনেকেই সরযূ নদীতে স্নান করে উঠে এসে মন্ত্র পাঠ করছেন, তেমনই অন্যদিকে চলছে গান বাজনা এবং রামের নাম। ঘন ঘন উঠছে জয় শ্রীরাম ধ্বনি। সেই ধ্বনিতে গলা মেলাচ্ছেন আশেপাশের মানুষজনও। শুধু অযোধ্যা নয়, বাইরে থেকেও এখানে উপস্থিত হয়েছে অনেক সাধু–সন্ত। মুশকিল হল, এই ভিড়টাই বাড়াচ্ছে আশঙ্কা। কারণ, করোনা আবহে যে কোনও রকম জমায়েতই বিপজ্জনক। তার উপর আবার এখানে লংঘন হচ্ছে সামাজিক দুরত্বের বিধি। অনেকেরই মুখে মাস্ক নেই, বা থাকলেও ঠিক করে পরেননি। আসলে ভক্তি, আর আনন্দের মুহূর্ত সব সতর্কতা ভুলিয়ে দিয়েছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাধু-সন্তদের কাছে ভূমি পূজনের জায়গায় যাওয়ার অনুমতি নেই। কিন্তু তারাও এই পূণ্য মুহূর্তের সাক্ষী হতে উপস্থিত হয়েছেন অযোধ্যাতেই। তাদের সাথে জুড়েছে অযোধ্যার সাধু-সন্তরাও। তাদের মধ্যে থেকেই একজন বলে উঠলেন, “দীর্ঘ লড়াই ও সাধুদের বলিদানের ফল এই রাম মন্দির। মোদীজি না থাকলেও তা সম্ভব হত না।” এই শুনেই এগিয়ে গেলাম তাঁর সাথে কথা বলতে। তাঁর কথায়, এই রকম উৎসব অযোধ্যাতে আগে কখনও দেখা যায়নি। হবেই বা না কেন, ৫০০ বছরের লড়াইয়ের ফল রাম মন্দির। আমরা জিতেছি। আমাদের রামজি জিতেছেন। পুরো দেশ জিতেছে। তাই সারা অযোধ্যা জুড়ে আজ আনন্দের পরিবেশ। পুরো শহরকে সাজানো হয়েছে। এরপরে যখন রাম মন্দির তৈরি হয়ে যাবে অযোধ্যা আবার তার গৌরব ফিরে পাবে। শ্যাম দাসের মতোন বাকি সাধু–সন্ত, কর সেবক সকলেরই একই মুখে একই কথা। অযোধ্যাতে ভগবান শ্রী রাম ছিলেন আর তিনি থাকবেন। আর করোনা? সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজার সময় কোথায়?