ভারতের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে এখন দরকার সাহসী সংস্কার। শুধু বড় বড় কথা বলে গেলে আর কাজের কাজ কিছুই না-করলে তলিয়ে যাবে দেশ। এভাবে টানা অনেক দিন অর্থনীতি ঝিমিয়ে থাকলে, তার ফল হবে মারাত্মক। অর্থনীতিতে কোভিড১৯-এর প্রভাব এবং সঙ্কটমোচনের রাস্তা কী, শুক্রবার এ বিষয়ে লিঙ্কড ইন-এ এই মন্তব্য করেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। তিনি মনে করিয়ে দেন, গত কয়েক বছরে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার কমছে। অন্যদের তুলনায় ক্রমশ হীনবল হয়ে পড়েছে দেশ। বেশ কিছু সংস্থার অনুমান, ২০২১ অর্থ বর্ষে ভারতের বৃদ্ধির হার ৯.৫ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হতে পারে।
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, আত্মনির্ভরতার কর্মসূচি খুবই ভাল, তবে আগে দরকার নিজেদের ত্রুটি সংশোধন করা। দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলির ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজন। তিনি বলেন, যখন অর্থনৈতিক কাজকর্ম ফের পুরোদমে শুরু হবে, তখন যাতে এমএসএমই সেক্টরের নগদ টাকার অভাব না হয়, তা কেন্দ্র দেখবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু তত দিন চালিয়ে যাওয়ার মতো পুঁজি এই ইউনিটগুলির হাতে নেই এবং সে-কারণে সংস্থাগুলি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
পাশাপাশি সঙ্কট মোকাবিলায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকা সম্পর্কে রাজন বলেন, সরকারের আয়-ব্যয়ের বৈষম্য সামলে ওঠার ক্ষমতা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রয়েছে। কিন্তু সেই ক্ষমতারও সীমা আছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তাঁর মতে, ‘ইতিমধ্যে যা ঘোষণা হয়েছে তাতে কৃষিক্ষেত্র চাঙ্গা হওয়ার কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অন্য ক্ষেত্রগুলিতে আরও অনেক কিছু করা দরকার।’
এ প্রসঙ্গে তিনি সরকারের রাজনৈতিক সাহসের কথাও মনে করিয়ে দেন। বলেন, ‘প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সংস্কারে ভারতে সর্বদাই রাজনৈতিক সাহসের অভাব দেখে গেছে। সব সময়ই ঐকমত্যে গড়ে তোলার অজুহাতে এ ধরনের সংস্কার মুলতুবি রাখা হয়েছে। এখন যদি সংস্কারের ইঞ্জিনে দরকারি রাজনৈতিক ধাক্কা দেওয়া যায়, যদি দ্রুত এ নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছোনো যায়, তা হলে এমন সংস্কার কার্যকর করতে হবে, যা হবে আসলে সাহসী রাজনৈতিক পদক্ষেপ।’