আজ বাংলা তথা গোটা ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবস। সেই হেতু বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর এরপরই আসরে নামেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করিয়ে দেন অমিত শাহের কলকাতার র্যালি থেকে শুরু হওয়া গণ্ডগোল এবং তারই মধ্যে উত্তর কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজের ভেতর স্বয়ং বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার বিষয়টি। ফলে প্রয়াণদিবসেও বিদ্যাসাগর হয়ে উঠেছেন বঙ্গ রাজনীতির আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয়বস্তু।
বুধবার অমিত শাহ টুইটে লেখেন, “ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণদিবসে আমার শ্রদ্ধা। তিনি ছিলেন বাংলার নবজাগরণের পথিকৃৎ ও সমাজ সংস্কারক, যিনি নারী শক্তির উত্থানের জন্যে অনেক বড় আকারে কাজ করেছিলেন। তাঁর চেষ্টাতেই সমাজের অনেক কালো দিক মুছে গিয়েছিল। তিনি বিধবা বিবাহ আইন প্রণয়ন করেন।”
আর অমিত শাহের এই টুইটের পরই আসরে নামেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহের টুইটকে রিটুইট করে অভিষেক লেখেন, “বিদ্যাসাগর ছিলেন একজন মহান সমাজ সংস্কারক। বিদ্যাসাগর ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ, মুক্ত চিন্তাভাবনার প্রতিমূর্তি।” এরপরই অমিত শাহকে কটাক্ষ করে তিনি তুলে আনেন গতবছরে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রসঙ্গ। অমিত শাহের এই শ্রদ্ধা প্রদর্শনকে ‘নোংরা দেখনদারি’ বলেও আক্রমণ শানান অভিষেক।
অমিত শাহ-র টুইট নিয়ে এদিন কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যও। টুইটে লিখেছেন, “যারা গোমূত্র, ভাবিজি পাপড় খেলে করোনা সেরে যাবে বলে সেই দলের নেতারা বিদ্যাসাগরকে স্মরণ করে কী করে? বিদ্যাসাগর সংস্কার মুক্ত মানুষ ছিলেন। আর এরা সংস্কার যুক্ত মানুষ। অমিত শাহ-র মিছিল থেকে মূর্তি ভাঙা হয়েছিল। তাই ভোটের জন্য এখন টুইট করে লোকদেখানো শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। এরা কুলাঙ্গারের দল।”
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৪ মে। লোকসভা নির্বাচনের প্রচার তখন তুঙ্গে। সেই সময়ই কলকাতায় অমিত শাহের রোড শো-তে নিজেদের ক্ষমতা আস্ফালন দেখাতে গিয়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। রোড শো’র দিন সন্ধেবেলা আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন গেরুয়া দলের কর্মী-সমর্থকরা। রোড শো শুরুর আগেই ধর্মতলায় নির্বাচন কমিশনের গাড়িতেও ভাংচুর চালানো হয়েছিল। তবে এই সমস্ত কিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছিল বিদ্যাসাগর কলেজের ভেতরে বিজেপি কর্মী এবং সমর্থকদের নোংরা তাণ্ডব।