রবিবারই প্রকাশ্যে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ওদিন রাতে দলের বৈঠকে না গিয়ে জোর গলায় দাবি করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে ৩০ জন বিধায়ক রয়েছেন। সোমবার গেহলটের বাসভবনে দলের জরুরি বৈঠকে যখন হাজির ছিলেন প্রায় অধিকাংশ বিধায়ক, তখনও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। তবে এ হেন দল বিরোধী কার্যকলাপের পরেও রাজস্থানের বিদ্রোহী নেতা সচিন পাইলটের জন্য দরজা খোলা রাখতে ইচ্ছুক দলের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন না এবং গান্ধীদের চোখে তাকে ছোট করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, ঘোষণা করার পর তার প্রতি সুর নরম করার ইঙ্গিত মিলেছে কংগ্রেস সূত্রে। সরাসরি যোগাযোগ না করলেও দূত মারফত পাইলটের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব পাঠান রাহুল। ইতিমধ্যে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও অন্তত তিনবার বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিদ্রোহ সামলাতে মধ্যপ্রদেশের মতো কোনও গড়িমসি না করে কংগ্রেস সচিন পাইলটের বিরুদ্ধে অত্যন্ত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাঁকে উপ মুখ্যমন্ত্রী ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অপসারিত করে বিধানসভায় সচিন-সহ তাঁর ১৮ জন অনুগামী বিধায়কের দলত্যাগ বিরোধী আইনে সদস্য পদ খারিজ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না ঘোষণা করার পর সচিনের প্রতি নরম-গরম পদ্ধতি প্রয়োগ করা শুরু করেছে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা একটি বার্তায় জানান, সচিন যদি বিজেপির সঙ্গে সংশ্রব ত্যাগে আন্তরিক হন তাহলে এই মুহূর্তে হরিয়ানায় বিজেপি সরকারের আতিথ্য গ্রহণ বন্ধ করুক। উল্লেখ্য, সচিনের অনুগামীরা হরিয়ানায় একটি পাঁচতারা হোটেলে রয়েছেন বলে সূত্রের খবর এবং সেখানে যাতে কেউ প্রবেশ না করতে পারে তার জন্য রাতারাতি সেই হোটেলটিকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে অশোক গেহলটের প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে মন্তব্যেও লাগাম পরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীকে ‘সামলে’ কথাবার্তার উপদেশ দেওয়ার আগেই সচিন পাইলট সম্পর্কে যা ক্ষতিকর মন্তব্য করার গেহলট করে দিয়েছেন। অশোক গেহলট প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে জানিয়েছিলেন, রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটানোর জন্য সচিন পাইলট বিজেপির সঙ্গে চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন এবং তার অনুগত বিধায়কদের জন্য ২০ কোটি টাকা দর হেঁকেছিলেন। এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যপ্রমাণ তার হাতে রয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে গেহলট এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর সরকার সুরক্ষিত। তার সঙ্গে ১০৬ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। অন্যদিকে বিজেপিও গেহলটের দ্রুত ‘ফ্লোর টেস্ট’–এর দাবি থেকে সরে এসেছে।