বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। কিছুদিন আগেই মিনিয়াপোলিস কাণ্ডের জেরে নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে তাঁকে। এমনকী বিক্ষোভকারীদের ভয়ে হোয়াইট হাউজের তলায় বিশেষ বাঙ্কারে গিয়ে লুকোতে হয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তাও প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ট্রাম্পকে সরাসরি ‘অযোগ্য’ বলে দাবি করেছেন। এবার আমেরিকায় ট্রাম্প বিরোধীরা বর্তমান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এখন রোম সম্রাট নিরোর তুলনা করতে শুরু করেছেন। শোনা যায়, যখন রোম পুড়ছিল নিরো নাকি সেই সময় বেহালা বাজাচ্ছিলেন। তেমনি গোটা আমেরিকা জুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ যখন প্লাবনের মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশকে, তখন দেশের প্রেসিডেন্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে সাউথ ডাকোটায় যাচ্ছেন বাজি পোড়াতে!
সাউথ ডাকোটায় পাহাড়ের গায়ে পাথর কেটে নির্মিত হয়েছে প্রাক্তন চার প্রেসিডেন্টের মুখাবয়ব। বর্তমান প্রেসিডেন্ট তাঁর চার পূর্বসূরী জর্জ ওয়াশিংটন, থমাস জেফারসন, থিওডর রুজভেল্ট ও আব্রাহাম লিঙ্কন–এর সামনে আতস বাজির প্রদর্শনী করে প্রাক স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করবেন। আশা করা হচ্ছে অনুষ্ঠানে ৭৫০০ মতো দর্শকের জমায়েত হবে এবং সামাজিক দূরত্ব নিয়ে কোনও কড়াকড়ি করা হবে না সে কথা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন সাউথ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েম। দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে না ভেবে ট্রাম্প এখন স্পষ্টতই উচ্ছ্বসিত সাউথ ডাকোটা প্রদেশের রাশমোরে বাজি পোড়ানোর উৎসব নিয়ে। আতসবাজির প্রদর্শনী প্রসঙ্গে বৃহষ্পতিবার তিনি বলেন, ‘আমরা একটা দুর্দান্ত সন্ধ্যা কাটাতে চলেছি। এমন বাজির প্রদর্শনী খুব কম লোকই দেখেছে। ব্যাপারটা খুবই উত্তেজক হবে।’
ডেমোক্র্যাট দলের সমর্থকরা প্রশ্ন তুলেছেন, যে ১ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন নাগরিক করোনাভাইরাসে প্রাণ হারালেন অথবা দেশের দক্ষিণে এবং পশ্চিমে যা নতুন করে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে সে বিষয়ে কি প্রেসিডেন্ট কিছু বলবেন? সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ আন্তোনি ফাউচি জানিয়েছেন সংক্রমণ বৃদ্ধির হার কমাতে না পারলে সারা দেশের পক্ষে সেটা মারাত্মক বিপদের কারণ হয়ে উঠবে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে বিরোধীদের জানতে চেয়েছেন, এবার কি প্রেসিডেন্ট মাস্ক পরবেন? উল্লেখ্য, ইউরোপের তুলনায় আমেরিকার সংক্রমণ বৃদ্ধির হার যথেষ্ট বেশি। বহু প্রদেশেই রোজ নতুন করে সংক্রামিতের রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। ফাউচি কয়েকদিন আগেই জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে যদি বেশ কিছু ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে দৈনিক সংক্রামিতের সংখ্যা এক লক্ষে পৌঁছে যাবে।