৩৫০ কোটি টাকার জালিয়াতি করে দেশ ছেড়ে পালানোর অভিযোগ উঠল পাঞ্জাব বাসমতী রাইস সংস্থার ডিরেক্টর মনজিৎ সিং মাখনির বিরুদ্ধে। তবে ২ বছর আগেই কানাড়া ব্যাঙ্ক-সহ ৬টি ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতারণা করে কানাডা পালিয়েছেন তিনি। এতদিনে সামনে এল সবকিছু।
সম্প্রতি কানাড়া ব্যাঙ্কের তরফে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। মামলা রুজু হয়েছে অমৃতসরের চাল সংস্থার ডিরেক্টর মনজিৎ সিং মাখনি, তাঁর ছেলে কুলবিন্দর সিং মাখনি, বৌমা জসমিত কৌর মাখনি-সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কানাড়া ব্যাঙ্ক ছাড়াও আরও ৫টি ব্যাঙ্ক থেকে বড় অঙ্কের টাকা প্রতারণা করেছেন তাঁরা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, ১৭৫ কোটি টাকা কানাড়া ব্যাঙ্ক থেকে নিয়েছিলেন মনজিৎ। ৫৩ কোটি টাকা অন্ধ্র ব্যাঙ্ক থেকে, ৪৪ কোটি ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া থেকে, ৪১ কোটি ইউকো ব্যাঙ্ক থেকে, ২৫ কোটি ওবিসি থেকে, ১৪ কোটি আইডিবিআই থেকে ঋণ নিয়েছিলেন মনজিৎ।
কানাড়া ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ২০০৩ সাল থেকে মনজিতের সংস্থাকে ঋণ দিয়েছেন তাঁরা। ২০১২ সালে তাঁদের ব্যাঙ্কের সঙ্গে আরও পাঁচটি ব্যাঙ্ক জুড়ে একটি অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়। তখন সেখান থেকেই ঋণ নেওয়া শুরু করেন মনজিৎ।
গত বছরের মার্চ মাসে কানাড়া ব্যাঙ্কের অন্তর্তদন্তে ধরা পড়ে এই বিপুল অঙ্কের কারচুপি। বিষয়টি প্রথম নজরে আসে, ২৯১ কোটি টাকা মূল্যের যে চাল ঋণের বিনিময়ে বন্ধক রেখেছিলেন মনজিৎ, তা সরিয়ে নেওয়া হলে। মনজিৎ দাবি করেন ওই চাল তিনি বিক্রি করেছেন, কিন্তু তার বিনিময়ে কোনও কাগজ তিনি জমা দেননি ব্যাঙ্কে।
সন্দেহ হয় কানাড় ব্যাঙ্কের। মনজিতের খোঁজ করতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি দেশে নেই। তখনই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে অভিযোগ জানান কানাড়া ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরামর্শেই শেষমেশ এ বছরের জুন মাসে সিবিআইয়ের কাছে তদন্ত করে কানাড়া ব্যাঙ্ক। সিবিআই জানিয়েছে, ‘সর্বত্র খোঁজ করা হয়েছে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর। অনেক আগেই, ২০১৮ সালে তিনি কানাডা চলে গেছেন।’
মনজিৎ সিংয়ের ছোলে ও বৌমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বৌমা জসমিত কৌর মাখনির আইনজীবী জ্যোতি সারিন বলেন, বিষয়টি এখন সিবিআইয়ের হাতে। আইনি পথেই লড়াই হবে। এ নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।