চলতি সপ্তাহেই ফের ভয়ানক বন্যা দেখা দিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসামে। ধীরে ধীরে সেখানে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হচ্ছে। সূত্রের খবর, সেখানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২ লক্ষের বেশি মানুষ। এমনকি গুয়াহাটির আবহাওয়া দফতর থেকে গতকালই জানানো হয়েছে যে, আজ এবং কাল, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও মনিপুরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে অতি বর্ষণের জেরে আসামের বন্যা পরিস্থিতি যে আরও ঘোরালো হয়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য।
ইতিমধ্যেই সেখানে দ্বিতীয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২ লক্ষ মানুষ। এখনও পর্যন্ত ১১,৫০০-এর বেশি মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে আসামের দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগ। বৃহস্পতিবার বন্যার জল ঢুকেছে রাজ্যের নয়টি জেলায়। ধীমাজি, বিশ্বনাথ, গোলাঘাট, জোরহাট, মাজুলি, শিবাসাগর, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়ার বিস্তৃণ এলাকা এখন বন্যা কবলিত। এমনকি গতকাল লাগাতার ভারী বৃষ্টির জেরে ডিব্রুগড়ের অল ইন্ডিয়া রেডিও সেন্টারের গোটা স্টুডিও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ফলে স্টুডিওর সব কাজকর্ম বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় সেন্টার কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, আপাতত রেডিও সেন্টার থেকে সমস্ত সম্প্রচার বন্ধ রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে টানা অতি ভারী বৃষ্টি শুরু হয় ডিব্রুগড়ে। রাতভর টানা বৃষ্টিতে ভাসে অল ইন্ডিয়া রেডিও অফিস তথা স্টুডিও কমপ্লেক্স। ওই এলাকা চত্বরে অধিকাংশ রাস্তায় হাঁটু জল। জল জমতে শুরু করায় জেলা প্রশাসন থেকে কনভয় রোড বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, চীন-ভারত ও ইন্দো-মায়ানমার সীমান্তের সবচেয়ে কাছে এই রেডিও স্টেশন। ডিব্রুগড়ের এই রেডিয়ো অফিস পূর্ব ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি গণমাধ্যম।
উল্লেখ্য, একদিকে করোনা ভাইরাস, অন্যদিকে ভয়াল বন্যার আশঙ্কা। একবার নয়, দু-দুবার বন্যা। এই দুইয়ের তাণ্ডবেই রীতিমত শোচনীয় দশা আসামের। গত মাসেই ঘূর্ণিঝড় উম্পুন বাংলায় ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল। তার জেরে অসমের হড়পা বান তৈরি হয়। একটানা সাগরের জলীয় বাষ্পও ঢুকছে উত্তর-পূর্বের পাহাড়ে। আর তার জেরেই সাত জেলা অর্থাৎ লখিমপুর, তিনসুকিয়া, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, দারাং, নলবাড়ি এবং গোয়ালপাড়ার দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই ফের বিপর্যয়।