রাজ্যে করোনা মোকাবিলায় গত ২ মাস ধরেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে মাস্ক তৈরি হচ্ছিল। আর এই কাজের রাজ্যের মধ্যে সেরার শিরোপা পেল হুগলী জেলা। বুধবার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের অন্যান্য জেলা মিলিয়ে গ্রামীণ এলাকায় আনন্দধারা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে ৪০ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৭৪টি মাস্ক তৈরি করেছে। তার মধ্যে হুগলী জেলা একাই ১০ লক্ষ ৩০ হাজার ৪৫৭টি মাস্ক (অর্থাৎ মোট সংখ্যার এক-চতুর্থাংশ) তৈরি করে লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে সেরার তকমা ছিনিয়ে নিয়েছে। করোনা প্রতিরোধে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীদের কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবেই এ দিনই জেলাকে সম্মানিত করা হয়। রাজ্যের মধ্যে হুগলীকে প্রথম স্থানে তুলে এনে সেরার শিরোপা অর্জনের খবরে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সেই কর্মীরা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হুগলীরই প্রতিবেশী জেলা হাওড়া। তাদের উৎপাদিত মাস্কের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৫৯ হাজার। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে মালদা।
করোনা মোকাবিলায় প্রথম থেকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হাতে তৈরি মাস্কের উপরে গুরুত্ব দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহেই লকডাউনের সময় জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের ভিডিও কনফারেন্স করেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। ওই বৈঠকেই স্থির হয়, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ১০০ শতাংশ বাসিন্দাদের মাস্ক ব্যবহারের দিকে জোর দেবে প্রশাসন। একইসঙ্গে মাস্কের জোগানেও যাতে ঘাটতি না-হয়, তার জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে হাতে তৈরি মাস্কের জন্য কর্মসূচি নেওয়া হয়।
প্রশাসন জানিয়েছে, জেলায় গ্রামীণ এলাকায় আনন্দধারা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অধীনে প্রায় ৪০ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। প্রত্যেক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে পরিকল্পনামাফিক কাজে লাগানোয় কয়েক মাসের মধ্যেই ১০ লক্ষ ছাপিয়ে যায় তৈরি হওয়া মাস্কের সংখ্যা। অর্থাৎ, সারা রাজ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠী যে মাস্ক তৈরি করেছে, তার মধ্যে ২৫ শতাংশ মাস্ক গিয়েছে হুগলী থেকেই। ওই মাস্কের ৮০ শতাংশ বিক্রিও হয়ে গিয়েছে। মাস্কের গুণগত মান ভালো থাকায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের মধ্যে মাস্কের ব্যাপক চাহিদাও বজায় রয়েছে।