দেশের কর্মসংস্কৃতি আমূল বদলে দিয়েছে করোনা মহামারী। সংক্রমণ ঠেকাতে এখন নয়া মন্ত্র সামাজিক দূরত্ব। সেই ফর্মুলা মেনেই এবার স্বাস্থ্যপরীক্ষা থেকে শুরু করে টিকিট পরীক্ষার জন্য রোবট মোতায়েন করার কাজ শুরু করল রেল। এই খবর সামনে আসার পরেই কাজ হারানোর আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন টিটিইরা।
মধ্য রেলের মুখ্য জনসংযোগ অধিকারীক শিবাজী সুতার জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে এই রোবট কাজে দেবে। জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জীব মিত্তল বলেন, প্রযুক্তির বিকাশে সমাজ এখন অনেক এগিয়ে। নিরাপত্তার জন্য তাই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই অটোমেটিক টিকিট চেকিং এন্ড ম্যানেজিং এক্সেস’ বসানো হল মহারাষ্ট্রের নাগপুরে। টিকিট চেকিংয়ের পাশাপাশি থার্মাল স্ক্রিনিং ও করবে সংশ্লিষ্ট মেশিন। পরীক্ষামূলকভাবে সফল হলে তা অন্য স্টেশনগুলিতেও বসানো হবে।
একদিকে যখন টিকিট চেকিং ব্যবস্থার এই পরিবর্তন, ঠিক তখন রেলে এলেন ‘ক্যাপ্টেন অর্জুন’। ইনি কোনও মানুষ নন, রোবট। শুক্রবার তিনি সটান হাজির হলেন পুনে রেল স্টেশনে। থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি এই রোবট সন্দেহজনক গতিবিধির যাত্রীদের হদিশ দেবে। মোশান সেন্সর লেন্স যুক্ত এই রোবটে পিটিজেড ও ডোম ক্যামেরা রয়েছে। পুনে স্টেশনের প্রবেশদ্বারে আরপিএফ বিভাগের তত্বাবধানে এই রোবট বসানো হয়েছে গত শুক্রবার। যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা নেওয়ার পাশাপাশি এই রোবট আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পারবে। প্রয়োজনে যাত্রীকে উপদেশ দেবে। মাস্ক না থাকলে দাম নিয়ে মাস্কও দেবে যন্ত্রমানবটি। তাপমাত্রা সন্দেহজনক হলে সতর্কতামূলক ভাবে সাইরেন দিয়ে রেলকর্মীদের সজাগ করে দেবে। সংগ্রহ করবে রেকর্ড।
তবে একের পর এক মানবহীন কর্মসূচি রেলে প্রয়োগ খুব ভালো চোখে দেখছে না কর্মী সংগঠনগুলি। তারা অভিযোগ তুলেছেন, কর্মী সংখ্যা পঞ্চাশ শতাংশ কমানোর যে পরিকল্পনা নিয়েছে রেল, এটা তারই অঙ্গ। রোবট মোতায়েনে করায় রেলকর্মীদের মধ্যে কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। দূরত্ব বজায়ের নানা প্রয়াস কি কর্মহীন করে তুলবে বহু মানুষকে, উঠছে এমন প্রশ্নই।