করোনা সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে জারি হয়েছে একটানা লকডাউন। আর তার জেরেই বন্ধ কল-কারখানা, রুজি-রোজগার। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করেই আগামী ৬ মাস বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী যাঁদের রেশন কার্ড নেই, তাঁদেরও রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। পরিযায়ী শ্রমিকেরা রেশন পাবেন, এটা নতুন কী? মুখ্যমন্ত্রীই বলেছেন, সবাই রেশন পাবেন। বৃহস্পতিবার খাদ্যসাথী ভবনে এই মন্তব্য করেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকেরা আগামী দু মাসের জন্য বিনামূল্যে রেশন পাবেন। পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন, ২০ আগস্ট থেকে দেশে চালু হবে ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’। অর্থাৎ বাংলায় যদি কারও রেশন কার্ড থাকে, তিনি মুম্বই বা বেঙ্গালুরু গিয়ে রেশন তুলতে পারবেন। আবার মুম্বই বা বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা কেউ এখানে থাকলে তিনি এখান থেকে রেশন তুলতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যসাথী প্রকল্পে রেশন তো পাচ্ছেন সবাই। নতুন রেশন কার্ডের বিষয়ে প্রায় সাত মাস আগে আমরা কেন্দ্রকে বলে দিয়েছি, এটা সম্ভব নয়। সেই সিদ্ধান্ত বদলায়নি।’ তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আজ যা ভাবেন, কেন্দ্র তা পরে ভাবে। ওদের সব ঘোষণা টিভির পর্দায় থেকে যাবে!’
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর ফের রেশনের বিলিবণ্টন নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। খাদ্যমন্ত্রীর জবাব, ‘রাজ্যপাল আবার আজগুবি ও ভুল তথ্য পরিবেশন করছেন। ডাল নিয়ে বিরোধীরা অভিযোগ করছেন। রাজ্যপালও বলছেন। বাংলার মানুষ মুসুর ও মুগডাল খান। তরকার ডাল খেতে পারেন না। মুসুরডাল প্রয়োজন ৪৩২৯০ মেট্রিক টন। কেন্দ্রীয় কোঅপারেটিভ নাফেড মাত্র ১৩৩৭০ মেট্রিক টন ডাল এনেছে। রাজ্যপাল খাদ্য দফতরের অআকখ জানেন না। ১৩ মে ২০২০ পর্যন্ত ৮৭৭৮৭৭৫৯ জন মানুষকে চাল, আটা দেওয়া হয়েছে। জুন মাসের রেশনের জন্য ইতিমধ্যে অতিরিক্ত ২৬১৮৮৭ কেজি চাল তোলা হয়েছে। ৩৯ হাজার মেট্রিক টন বাকি আছে। ১৭ জুন তোলা হবে।’
রাজ্যপালকে তাঁর কটাক্ষ, ‘অনুরোধ করছি, খাদ্য নিয়ে জঘন্য রাজনীতি আর করবেন না। মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না।’ এছাড়া মন্ত্রী এ-ও বলেন যে, ‘অনেক ডিলারকে ইতিমধ্যে শোকজ, সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের দোকান বন্ধ না করে পাশাপাশি দোকানগুলির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে, মাস্ক পরে মানুষ রেশন তুলছেন, তাই গোলমালের খবর নেই।’