কোভিডের ধাক্কা শুধু অর্থনীতিতে লাগেনি, মানুষের মনোবলই ভেঙে গিয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কনজিউমার কনফি়ডেন্স সার্ভে প্রকাশ পেয়েছে এই তথ্য। কাজ হারানো, বেতন কমে যাওয়া, মন্দা-সবমিলিয়ে এত নিরাশাবাদী অতীতে কখনওই ছিল না দেশবাসী।
ফোনের মাধ্যমে গোটা দেশের ১৩ টি শহরের ৫৩০০ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এই সমীক্ষা করা হয়েছে। যে শহরগুলিতে মহামারীতে বেশি আক্রান্ত সেখানে সমীক্ষার জন্য বেশি করে নমুনা নেওয়া হয়েছে।
সার্ভে জানাচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতির সূচক (কারেন্ট সিচুয়েশন ইনডেক্স তথা সিএসআই) ঐতিহাসিক ভাবেই কম। মে মাসে তা ছিল ৬৩.৭ শতাংশ। অথচ মার্চে অর্থাৎ যখন কোভিডের সংক্রমণ পুরোমাত্রায় ছড়িয়ে পড়েনি সেই সময়ে সূচক ছিল ৮৫.৬।
শুধু এ বছর নয়, আগামী বছরের সম্ভাবনা নিয়েও মানুষের হতাশা তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতের থেকে প্রত্যাশার সূচক (ফিউচার এক্সপেক্টেশনস ইনডেক্স তথা এফইআই) মার্চ মাসে ছিল ১১৫.২। তা মে মাসে এসে দাঁড়িয়ে ৯৭.৯। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী জমানায় এই সূচক এই প্রথমবার ১০০-র নিচে নেমে গেল।
দেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থানের সার্বিক চিত্র, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দামদস্তর, আয়, খরচ ইত্যাদি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ তথা উপভোক্তাদের মানসিকতা আন্দাজ করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই সমীক্ষা নির্দিষ্ট সময়ান্তরে চালায়।
পর্যবেক্ষকদের মতে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই সমীক্ষার মধ্যেই আরও অশনিসংকেত রয়েছে। তা হল, বেতন কমে যাওয়া বা চাকরি হারানোর ব্যাপারে বহু মানুষের মনে আতঙ্ক রয়েছে। তাই তাঁরা খরচ কমাবেন। অর্থাৎ বাজারে চাহিদা আরও কমে যেতে পারে।
সার্ভের একটি অংশে সেই বিষয়টি কার্যত বলাও হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে যে, মানুষ ইতিমধ্যে বেহিসাবি খরচ কমিয়ে দিয়েছে। কারণ, তাঁরা মনে করছেন এই পরিস্থিতি আপাতত চলবে। সামগ্রিক ভাবে মানুষ যে খরচ করছেন, তার মধ্যে শুধু রয়েছে নিত্য প্রয়োজনের সংসার চালানোর সামগ্রী। আর কোনও খাতেই কেউ বিশেষ খরচ করছেন না।