যেমন আশঙ্কা করা হয়েছিল, হলও ঠিক তাই। অবশেষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত ভারতেও শুরু হয়ে গেল, করোনাভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন অর্থাৎ গোষ্ঠী সংক্রমণ। ‘জয়েন্ট কোভিড টাস্ক ফোর্স’-এর ১৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের একটি দল, যাতে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিসিজ কন্ট্রোলের প্রাক্তন মাথাও রয়েছেন, সেই দলের মতে, ভারত এখন গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্বে ঢুকে গিয়েছে। এরইসঙ্গে মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন তাঁরা। ‘জয়েন্ট কোভিড টাস্ক ফোর্স’-এর মতে করোনাভাইরাস রুখতে যে পরিকল্পনা সরকার করেছে তার জন্য কোনও মহামারী বিশেষজ্ঞ বা এপিডেমিওলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবি করেছিল, ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হওয়ার মুখে। সেই সময় হু-র দাবি খারিজ করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। যুগ্মসচিব লভ আগরওয়াল বলেছিলেন, ‘দেশে যদি গোষ্ঠী সংক্রমণের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে আমরাই তা সবার আগে জানাব। আমরা জনগণকে বলব সতর্ক থাকতে…এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি।’ এরপর গত ২৪ এপ্রিল কেন্দ্রীয় সরকারের তৎপরতায় করোনা দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছয়নি বলে দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। মোদী সরকারের নেওয়া একাধিক পদক্ষেপের কারণে ভারতের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভাল বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
করোনার তৃতীয় পর্যায়কে গোষ্ঠী সংক্রমণ বলা হয়। এই পর্যায়ে কোন পথে ভাইরাস হানা দিচ্ছে, তার হদিশ পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। ‘জয়েন্ট কোভিড টাস্ক ফোর্স’-এর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভারত সরকার কি কোনও মহামারী বিশেষজ্ঞ বা এপিডেমিওলজিস্টের পরামর্শ নিয়েছে? যদি নিত তাহলে এই পরিস্থিতি অনেকটা ভাল হতে পারত…’ উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে গঠিত এই ‘জয়েন্ট কোভিড টাস্ক ফোর্স’-এ ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন এবং ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ এপিডেমিওলজিস্টস-এর সদস্যরা রয়েছে। তাঁরা মনে করছেন, যেভাবে এপ্রিলের শেষ থেকে ভারতে করোনাভাইরাসের আক্রান্তের হার বাড়ছে তা গোষ্ঠী সংক্রমণেরই উদাহরণ।