গোটা বিশ্ব ফুঁসছে ক্ষোভের আগুনে৷ জ্বলছে আমেরিকাও৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি জর্জ ফ্লয়েডকে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ যখন বুট দিয়ে গলা চেপে ধরেছেন, তখন জর্জ কাতর ভাবে বলছেন, ‘অফিসার…আ আমি শ্বাস নিতে পারছি না। পা টা তুলুন। আপনি কি আমাকে মেরে ফেলতে চাইছেন? শ্বাস নিতে পারছি না!’ এই নৃশংস হত্যা ক্যামেরাবন্দী করে রাখেন এক ব্যক্তি৷
এই ভিডিও ভাইরাল হতেই ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে আমেরিকা। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি সহ নিউ ইয়র্ক, ডেনভার, অ্যাটলান্টা, ডেট্রয়েট, হিউস্টন, লুইভিলে, কেনটাকিতে জনরোষ আছড়ে পড়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের উপর। মিনিয়াপোলিসের অভিযুক্ত অফিসার ডেরেক শভিনের বিরুদ্ধে এদিনই থার্ড-ডিগ্রি হত্যা এবং খুনের দায়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তা সত্ত্বেও থামেনি বিক্ষোভ। মেয়রের জারি করা কারফিউ লঙ্ঘন করে শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ মিনিয়াপোলিসে পথে নেমে পড়ে কমপক্ষে ৫০০জন বিক্ষোভকারী। চলে লুঠপাট, ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ। ওয়াশিংটন ডিসি-র ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট চত্বরে ঢুকে পড়ে একদল বিক্ষোভকারী স্প্রে দিয়ে দেওয়ালে প্রতিবাদী স্লোগান লিখে দেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে উড়ে আসে বোতল, পাথর, বিয়ারক্যানের মতো ভারী জিনিসপত্র। ছোঁড়া হয় আতসবাজিও। ওয়াশিংটনে কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ সামলাতে নেমেছে আমেরিকার জাতীয় রক্ষী বাহিনী।
গত সোমবার মিনিয়াপোলিসে পুলিশের হেপাজতে মারা যান আফ্রো-আমেরিকান বংশোদ্ভূত, ৪৬ বছরের জর্জ ফ্লয়েড। এক পথচারীর রেকর্ড করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় জর্জের গলায় টানা আট মিনিট ধরে হাঁটু চেপে বসে আছেন এক শ্বেতাঙ্গ অফিসার। জর্জকে বারবার অফিসারকে অনুরোধ করতে শোনা যায় যে তিনি শ্বাস নিতে পারছেন না। কিন্তু জর্জ নেতিয়ে না পড়া পর্যন্ত হাঁটু ওঠাননি অফিসার। ওই ভিডিও ফুটেজ আপলোড হতেই তা ভাইরাল হয় এবং তারপরই আমেরিকায় ফের কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গদের বর্ণ বিদ্বেষের গোলমাল মাথা চাড়া দেয়। ঘটনার পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবারই ডেরেক এবং তাঁর তিন সহকর্মীকে বরখাস্ত করেছিল মিনিয়াপোলিস পুলিশ। কিন্তু তাতে বিক্ষোভ থামার বদলে আরও ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য শহরেও।