করোনা ভাইরাস বারে বারে যেভাবে রূপ আর আক্রমণের পন্থা বদল করছে তা বিজ্ঞানী ও ডাক্তারদের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমেরিকার নর্থওয়েস্টার্ণ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, কোভিড পজিটিভ ১৬ জন অন্তঃসত্ত্বা মহিলার প্লাসেন্টায় ক্ষত দেখা গেছে। কয়েকজনের প্লাসেন্টা থেকে রক্তপাতের ঘটনাও ঘটেছে। এই গর্ভবতী মহিলাদের প্রত্যেকের শরীরেই করোনার সংক্রমণ রয়েছে এবং আলটাসোনোগ্রাফির আগে প্রত্যেকের কোভিড টেস্টের রিপোর্টই পজিটিভ দেখা গেছে।
এবিষয়ে গবেষক এমিলি মিলার বলছেন, “কোভিড পজিটিভ মায়েদের শরীরে এই প্লাসেন্টার অবস্থান বদলে যাচ্ছে কিনা সেটাই চিন্তার কারণ। যতটুকু তথ্য পাওযা গেছে তাতে দেখা গেছে, প্লাসেন্টায় ক্ষত তৈরি হচ্ছে। রক্তপ্রবাহ অনিয়মিত হয়ে যাচ্ছে। ভয়ের কারণ এখনই আছে কিনা সেটা স্পষ্ট করতে পারেননি গবেষকরা, তবে এমিলি বলছেন শঙ্কার কারণ থেকেই যাচ্ছে”।
শরীরে করোনার সংক্রমণ থাকা অবস্থায় প্রসব হলে মায়ের শরীর থেকে শিশুর শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটতে পারে কিনা সেটাও এখনও অজানা। কিছু ক্ষেত্রে তার রিপোর্ট পজিটিভ, আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে মা করোনা পজিটিভ হলেও সদ্যোজাতের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। তবে সাম্প্রতি এই প্লাসেন্টায় ক্ষতর ঘটনা ডাক্তারদের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গর্ভকালীন সময় মায়ের শরীরে এই প্লাসেন্টা (Placenta) তৈরি হয়। বিজ্ঞানের ভাষায় একে গর্ভফুলও বলে। এই প্লাসেন্টা জরায়ুর দেওয়ালে লেগে থাকে। নিষিক্ত ডিম্বাণু থেকে যেখানে ভ্রূণ তৈরি হয় সেখানেই এই প্লাসেন্টা তৈরি হয়। এর কাজ হল সেতুর মতো। নাভির মাধ্যমে জরায়ু ও ভ্রূণের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করে। এর কাজ হল মায়ের শরীর থেকে ভ্রূণকে খাবার, অক্সিজেন সরবরাহ করা। ভ্রূণের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবারহ করে এই প্লাসেন্টাই।