উম্পুনের দাপটে কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে সুন্দরবন। চাষের জমিতে জল ঢুকেছে ভেঙে গেছে নদী বাধ। ক্ষতিগ্রস্ত অগুনতি বাড়ি। এর মধ্যে নিশ্চিন্তের খবর একটাই যে সুন্দরবনের বাঘেদের কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে সুন্দরবনের ক্ষতির অংক আনুমানিক ১২০ কোটির কাছাকাছি।
সুপার সাইক্লোন উম্পুনের অভিঘাতে কার্যত ধ্বংসের স্তূপে দাঁড়িয়ে বাদাবন ও তার অধিবাসী। পরের পর বাঁধ ভেঙেছে, বিট অফিস ক্ষতিগ্রস্ত, জেটি ভেঙেছে, নষ্ট হয়েছে জঙ্গলের ধারে থাকা নাইলন ফেন্সিং। তবু তার মধ্যে আপাত স্বস্তির জায়গা দুটি। এখনও পর্যন্ত সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের বসতি এলাকা থেকে বড় কোনও প্রাণহানির খবর আসেনি। আর বাদাবনের সম্রাট বাঘও হয়তো উম্পুনের থাবা থেকে নিজেদের বাঁচাতে পেরেছে।
বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘উম্পুনে সুন্দরবনের বাঘের অথবা অন্য কোনও জীবজন্তুর মৃত্যু হয়েছে, এমন খবর এখনও আমরা পাইনি। তবে ব্যাঘ্র প্রকল্পের ১০৭ কিলোমিটার দীর্ঘ নাইলনের ফেন্সিংয়ের একটা বড় অংশে অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে। কিছু জায়গায় নিশ্চিহ্ন। আমরা চেষ্টা করছি, সেটা কত দ্রুত মেরামত করা যায়। একই সঙ্গে সুন্দরবনের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ জেটি ভেঙেছে। বন দপ্তরের ক্যাম্প, বিট অফিসগুলো প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সবটা বুঝে উঠতে আরও ১-২ দিন লাগবে।’
বন দপ্তর সূত্রে খবর, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ মিলিয়ে কমপক্ষে ১২০ কোটি টাকার পরিকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। সেই অঙ্কটা আগামী ক’দিনে সামগ্রিক চিত্র জানার পর আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর জন্য ড্রোনের সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহার বক্তব্য, ‘ক্ষতি যে অপরিসীম, তা বলাই বাহুল্য। তবে এত ক্ষতি সয়েও সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ আবার কলকাতাকে বাঁচিয়ে দিয়ে গেল। হয়তো বাদাবনের বাঘকেও।’