মে মাসের শুরু থেকেই দেশের সমস্ত রাজ্যে ফিরছে পরিযায়ী শ্রমিকরা। কেন্দ্র প্রথমে নিখরচায় তাঁদেরকে ফেরানোর আশ্বাস দিলেও, পরে সেই কথা রাখেনি। যার ফলে নিজেদের টাকায় টিকিট কেটেই ফিরতে হয়েছে তাঁদের। এবার সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতেই এগিয়ে এল বাংলার সরকার। ভিনরাজ্য থেকে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিখরচায় ঘরে ফেরাতেই সিদ্ধান্ত এদিন নিল রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার টুইট-বার্তায় জানান, ‘অন্য রাজ্য থেকে বাংলায় ফেরা সমস্ত শ্রমিকদের খরচ বহন করবে সরকার।’
এদিন টুইট তিনি লেখেন, ‘রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যে সব স্পেশাল ট্রেন বাংলায় পৌঁছাবে, রাজ্য সরকার তার পুরো খরচ বহন করবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে একটি পয়সাও ভাড়া নেওয়া হবে না। রেল বোর্ডকেও সে কথা জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।’ এরপরই রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ এ দিন চিঠি দিয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্তের কথা রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদবকে জানিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, স্পেশাল ট্রেনে বাংলার শ্রমিকদের কাছ থেকে যেন ভাড়া না-নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে রেল বোর্ড সব রেলকর্তাকে নির্দেশ দিক। রাজ্য সরকারের সূচি অনুযায়ী যাতে রেল পরিষেবা শুরু হয়, তা নিশ্চিত করতেও রেল বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই কেন্দ্র-বাংলা তরজা চলছে। এ দিন বাংলার সিদ্ধান্ত জানার পরে রেল মন্ত্রক সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি এখনও দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে গিয়েছেন রেল কর্তারাও। রাজ্যের অন্যতম বিরোধী দল সিপিআইএমের একটা নেতা মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাজ্যের শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। ঘরের মানুষ ঘরে ফিরুক। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’
নবান্নে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘১৬টি রাজ্য থেকে ১০৫টি ট্রেনের ভাড়া মেটাবে রাজ্য সরকার।’ জানান, সবচেয়ে বেশি ট্রেন আসবে কেরল থেকে, ২৮টি। তার পরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র, ১৭টি। বাকি স্পেশাল ট্রেনগুলি আসবে মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাত, দিল্লী, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর, কর্নাটক, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা এবং উত্তরাখণ্ড থেকে। স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরাতে বাসের ব্যবস্থাও থাকছে। তাঁর কথায়, ‘এতদিন পর্যন্ত সাতটি ট্রেনের মধ্যে দু’টি পৌঁছেছে। শনিবার দু’টি পৌঁছেছে। রবিবার আসবে একটি ট্রেন।’