করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যখন ৫০ হাজার পার করে গিয়েছে তখন করোনার আতঙ্ক বুকে নিয়েই যাত্রা শুরু হয় যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবার। প্রথমে ভিন রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজ নিজ রাজ্যে ফেরাতে চালু করা হয় শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন। পরে সাধারন মানুষের জন্যেও বিশেষ যাত্রীবাহী ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
তবে দেশের করোনা পরিস্থিতি যা তাতে এই মুহূর্তে ট্রেন চালানোতে যথেষ্ট বিপদ আছে এমন আশঙ্কার কথা আগেই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞ মহল। এবার তাঁদের আশঙ্কাই বাস্তবে রূপায়িত হল। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু হওয়ার পর থেকেই হু হু করে রাজ্যগুলিতে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর যে স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী পর্যন্ত স্বীকার করে নিয়েছেন যে পরিযায়ী শ্রমিকরা যত বেশি ঘরে ফিরছেন কত রাজ্যগুলিতে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে আবারও এক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়াতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে।
গত কয়েকদিনে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে যে পরিযায়ী শ্রমিকরা মহারাষ্ট্র, গুজরাত, রাজস্থান থেকে তেলেঙ্গানায় ফিরেছেন তাঁদের মধ্যে ২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশে সেই সংখ্যাটি ৩৭ জন। কিন্তু সব থেকে খারাপ অবস্থা বিহার এবং উড়িষ্যার। গত এক সপ্তাহে বিহার এবং ওড়িশায় গুজরাত, বাংলা, নয়াদিল্লী, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক নিজেদের রাজ্যে ফিরেছেন। শেষ খবর অনুযায়ী উড়িষ্যায় এখনও পর্যন্ত ২৩৪ জন এমন পরিযায়ী শ্রমিকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে যারা ভিন রাজ্য থেকে এসেছেন এবং তাঁদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ রয়েছে।
বিহারে ১৯০ জন করোনা পজেটিভ পরিযায়ী শ্রমিককে এখনও পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে। ফলে ক্রমশ যে রাজ্যগুলির বিপদ বাড়ছে বৈ কমছে না সেটা এই সমীক্ষার ফলাফল দেখলেই বোঝা যায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ তো সবে শুরু। এখনও কয়েক লক্ষ মানুষের ঘরে ফেরা বাকি রয়েছে। পাশাপাশি যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবাও শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রথম ধাপের বেশ কয়েকটি ট্রেন নিজের নিজের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে গিয়েছে। ফলে আগামী দিনে যে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বড় হবে এবং রাজ্যগুলির বিপদ যে আরও বাড়বে তা কার্যত পরিষ্কার।