করোনা মোকাবিলায় সরকারি উদ্যোগ এবং লকডাউনে মানুষের সমস্যা সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে রেড রোডে প্রতীকী প্রতিবাদে সামিল বাম নেতৃত্ব। সামাজিক দূরত্বের নীতি মেনে অবস্থান বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীর মতো নেতারা। কিন্তু, লকডাউন ভেঙে অবস্থান বিক্ষোভের অভিযোগে বাম শীর্ষনেতাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। বাম নেতাদের গ্রেফতার করতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি পরিস্থিতি শুরু হয়।
রাজ্য ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগে শনিবার রেড রোডে বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল বামেদের। সরকারি নির্দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল তাদের। কিন্তু লকডাউনের বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বাম নেতাদের গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশ। যে গাড়িতে করে তাঁরা রেড রোডে এসেছিলেন সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়। বাম নেতৃত্বকে গ্রেপ্তার করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। বামেদের অভিযোগ, যে স্বাস্থ্যবিধি ও লকডাউনের নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হল সেই নিয়মই ভঙ্গ করেছে পুলিশ। সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করা হয় বলে অভিযোগ।
প্রথমে এন্টালি মার্কেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি থাকলেও পরে রেড রোডে প্রতীকী বিক্ষোভ দেখান বাম নেতারা। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘আমরা প্রথমে যেখানে অবস্থান করতে চেয়েছিলাম, সেটা রেড জোন বলা হয়। তারপর যেখানে করব বলি, সেটাও নাকি রেড জোন বলা হয়। শেষে লোকালয়হীন রেড রোডে কর্মসূচি নিয়েছিলাম।’ রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্য সরকারকে একহাত নিয়ে বর্ষীয়ান বাম নেতা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের জন্য তো অন্য রোগ থেমে থাকে না। কিন্তু, সেই চিকিৎসার সুযোগ সঙ্কুচিত হয়েছে। অথচ রাজ্যে নাকি এতগুলো সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রয়েছে।’
বামেদের দাবির মধ্যে মূলত ছিল, আরও বেশি পরীক্ষা, আক্রান্ত-মৃতদের সংখ্যা সম্পর্কে বিভ্রান্ত তৈরি না করা এবং বিপন্ন মানুষের কাছে খাদ্য ও ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার মতো বিষয়। একই বিষয়ে গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। বামেদের আজকের বিরোধিতায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের দেখা যায়নি। প্রসঙ্গত, লকডাউনের মধ্যে প্রকাশ্যে কর্মসূচিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে রেডরোডে দেখা যায়নি বিধান ভবনের নেতাদের। শুক্রবার বাম চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের কথা হয়েছিল।