শুক্রবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের জনগণকে মানবিক হওয়ার আবেদন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘কেউই হয়ত চায় না, তাঁর এলাকায় কোনও করোনা রোগীর দেহ সৎকার হোক, এলাকার হাসপাতালে কোনও করোনা আক্রান্ত আসুক। কিন্তু এটা তো লড়াইয়ের সময়। এভাবে আতঙ্কে না থেকে মানবিক হতে হবে আমাদের। চিকিৎসা দিতে হবে সবাইকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, মৃত্যুর পর করোনার জীবাণু শরীরে আর থাকে না। তাই হাত জোড় করে বলছি, এভাবে দেহ সৎকার করতে বাধা দেবেন না।’
সত্যিই মরেও যেন মুক্তি নেই! রাজ্যে করোনায় প্রথম মারা যাওয়া দমদমের বৃদ্ধের দেহ সৎকার করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিল পুলিশ। চলে স্থানীয়দের ইটবৃষ্টি, গাড়ি ভাঙচুর। শেষ অবধি বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে নিমতলা শ্মশানে গভীর রাতে দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করে। তারপরই সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, করোনা আক্রান্ত কোনও হিন্দুর মৃত্যু হলে দেহ সৎকার করা হবে ধাপায়। কিন্তু বেলঘড়িয়ার বৃদ্ধের মৃত্যুর পরও স্থানীয়দের প্রবল বিক্ষোভ, অবরোধে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে।
এ দিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘সরকার কোন হাসপাতালে কী করবে, তা সরকারই ঠিক করবে। করোনার জন্য এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালকে যেমন আলাদা করা হয়েছে। এখানকার সব রোগীকে এসএসকেএম, শম্ভুনাথ পন্ডিতে পাঠানো হবে। সাগর দত্তে কী হবে, সেটা নিয়ে অনেক কথা শুনছি। কিন্তু সেটা সরকারই ঠিক করবে। তবে কোনও রোগীকে ফেরানো যাবে না। সবাই যেন চিকিৎসা পায়।’ তিনি জানান, ‘অনেক বড় লড়াই করেছি, এটাও একটা লড়াই, করোনাকে হারাতে হবে। সবাই মিলে হারাব। ৫৯টি করোনা হাসপাতাল হচ্ছে রাজ্যে। এটা মহামারির সময়। আইন অনুযায়ী, সরকার এখন হোটেল, কলেজ সব নিতে পারে। কিন্তু তেমনটা আমরা এখনই করছি না। তবে মানবিক হতে হবে আমাদের।’