করোনা মোকাবিলায় দেশের অধিকাংশ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকায় আগেই লকডাউনের কথা ঘোষণা হয়েছিল। তবে তার মধ্যেই মঙ্গলবার রাত ৮টায় ফের জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে এসে গোটা দেশজুড়েই টানা টানা ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই মতোই মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে গোটা দেশে জারি লকডাউন। আর এর ফলে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন। ঠিকঠাক ভাবে খেতে না পেয়ে প্রায় অনাহারে ঘরবন্দী হয়ে থাকতে হচ্ছে। যেমন উড়িষ্যার ভুবনেশ্বরে কাজ করতে গিয়ে আটকে পড়েছেন এ রাজ্যের প্রায় ৫৫জন শ্রমিক। দেশজুড়ে লকডাউন থাকায় বাড়ি আসতে পারছেন না তাঁরা।
জানা গিয়েছে, ঠিকঠাক ভাবে খাবার না পেয়ে তারা এখন প্রায় অর্ধাহারে জীবন কাটাচ্ছেন। উড়িষ্যা পুলিশ-প্রশাসনের কাছ থেকেও কোনও ধরনের সাহায্য পাননি তারা। সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে উড়িষ্যার ভুবনেশ্বরে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের সুতি -১ ব্লকের হাড়োয়া গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৫৫জন শ্রমিক। কিন্তু করোনা আতঙ্কে ভারতজুড়ে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার ফলে তারা এখন ভুবনেশ্বরের ১নং এয়ারপোর্ট ও অশোকনগর এলাকায় আটকে পড়ে আছেন। স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই ওই শ্রমিকদের নিজ রাজ্যে চলে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন।
হাজারি সেখ নামে ওই এলাকায় আটকে পড়া এক শ্রমিক জানিয়েছেন, আমরা প্রত্যেকেই এখানে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে রাজমিস্ত্রির কাজ করি। যে টাকা আয় করি তা পরিবারকে পাঠিয়ে দিই। এখন আমাদের কাছে টাকা-পয়সা নেই বললেই চলে। আমরা প্রচণ্ড আতঙ্কের মধ্যে ঘরবন্দী হয়ে আছি। খাবার পাচ্ছি না। কেউ কেউ আতঙ্কে কান্নাকাটি করছে। এদিকে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, তিনি বহিঃরাজ্যে আটকে পড়া মানুষদের সম্পর্কে অবগত আছেন। যারা যে রাজ্যে আছেন, সেই রাজ্যের প্রশাসনের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। কেউ যাতে অর্ধাহারে-অনাহারে না থাকেন সেই দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। তাদের ফেরানোর চেষ্টাও চালাচ্ছে রাজ্য সরকার।