এবার একেবারে কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় পড়তে হচ্ছে বিজেপি সংসদদের। একদিকে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশ- উভয় সংকটে পড়েছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে সংসদ ভবনে দর্শক আসা বন্ধ। সাংসদদের সংখ্যাও কমছে। মন্ত্রী-সাংসদরা আলিঙ্গন, করমর্দন এড়িয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে কয়েকগুণ আতঙ্ক বাড়িয়ে ‘সেলফ আইসোলেশন’-এ চলে গেছেন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিন্তু মঙ্গলবার বিজেপির সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি জানিয়ে দিয়েছেন, নির্ধারিত সূচী মেনেই চলবে সংসদের অধিবেশন। অধিবেশন স্থগিত রাখার পরামর্শ প্রসঙ্গে দলের নেতাদের তিনি বলেছেন, ‘আমরা যদি সংসদ অধিবেশন বন্ধ করে দিই, তাহলে দেশে ভুল বার্তা যাবে। চিকিৎসকরা যদি হাসপাতালে যেতে না চান তাহলে কী হবে? তাই অধিবেশন চলুক।’ কিন্তু, মোদীর এই আশ্বাসে মোটেই সায় দিতে পারছেন না তাঁর দলের সাংসদরাই।
অনেকের ধারণা, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক আবহে সংসদ অধিবেশন স্থগিত রাখা হলে, মধ্যপ্রদেশেও বিধানসভা অধিবেশন বন্ধ রাখার দাবি গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। সেক্ষেত্রে সে রাজ্যে কমলনাথ সরকার ফেলে দেওয়ার জন্য বিজেপির যাবতীয় প্রচেষ্টা ধাক্কা খাবে। অতএব আপাতত যে কোনও মূল্যে সংসদ চালাও নীতি নিয়েছেন মোদী। তাছাড়া করোনা ভাইরাস আক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তার ফলে দেশের অর্থনীতি কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। শেয়ারবাজার তলানিতে। টাকার মূল্য হু হু করে নামছে। এই পরিস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন বন্ধ করা হলে অর্থনীতিতে তার কুপ্রভাব পড়তে পারে- এই সাফাইও গাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিকে, সংসদে দর্শকদের আনাগোনা বন্ধ রাখা হয়েছে। কর্মী, সাংবাদিক-সহ অন্যদের জন্য ‘থার্মাল স্ক্রিনিং’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সাংসদদের অবশ্য এই পরীক্ষা করা হচ্ছে না। বাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার না মিললেও, সংসদ ভবনের বহু জায়গায় রাখা হয়েছে স্যানিটাইজার। সেন্ট্রাল হলে দু’হাত অন্তর স্যানিটাইজার। কিন্তু, ক্যান্টিন, টয়লেট, লাইব্রেরি প্রভৃতি জায়গায় রীতিমতো বুকে ভয় নিয়ে ঘুরছেন সাংসদরা। যেমন, মঙ্গলবার দুপুরে সেন্ট্রাল হলে মহারাষ্ট্রের এক সাংসদ সজোরে হাঁচি দিতেই মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে গেল চারিদিক। বিজেপি সাংসদ তথা অভিনেত্রী হেমা মালিনী এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘দেশে বহু মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। সংসদে বহু মানুষ আসেন। আমরা আমাদের কাজ করে চলেছি। কিন্তু, এখন ভাবনাচিন্তা করার সময় এসেছে।’