আসামে এনআরসি তালিকা বহির্ভূতদের জন্য খারাপ সময় আসতে চলেছে। সূত্রের খবর, জাতীয় নাগরিকপঞ্জী কর্তৃপক্ষ মার্চ মাসের ২০ তারিখ থেকে ‘রিজেকশন স্লিপ’ ধরাতে চলেছে। যার অর্থ, ‘কাগজ’ ধরিয়ে তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে যে তালিকা থেকে বাইরে থাকা ১৯ লক্ষ অসমবাসী আর ভারতীয় নন। এমনটাই জানিয়েছে আসামের বিজেপি শাসিত সরকার। রিজেকশন (প্রত্যাখান) স্লিপে উল্লেখ করা থাকবে যে কেন তাদের এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাইরে রাখা হল। যদিও তাৎপর্যপূর্ণভাবে, আসামের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই এনআরসি-র বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। তবে বর্তমান এনআরসি প্রক্রিয়াই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আসাম সরকার।
সূত্রের খবর, এনআরসি-র প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে সামান্য কিছু কাজ এখনও বাকি। ১২ শতাংশের মতো অসম্পূর্ণ রয়েছে যা শেষ হলে ওই রিজেকশন স্লিপ ধরানো শুরু হবে তালিকা বহির্ভূতদের। সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী চন্দ্র মোহন পাটোয়ারি কংগ্রেস বিধায়কের এক চিঠির উত্তরে জানিয়েছেন এমনটা। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘একবার এই কাজ শেষ হয়ে গেলেই আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে মার্চ মাসের ২০ তারিখ থেকে প্রত্যাখানের কাগজ ধরানো শুরু করার।’ বস্তুত আসামে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়ালের তরফ থেকেই এই তথ্য পেশ করেছেন তিনি।
কংগ্রেসের তরফে আরও আরেকটি প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, আসামে এনআরসি করতে কত টাকা খরচ হয়েছে সরকারের? সেই প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়, সব মিলিয়ে ১,৩৪৮.১৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অন্যদিকে গত বছর ৩১ আগস্ট পেশ হওয়া এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকায় সর্বমোট ১৯,০৬,৬৫৭ জন ব্যক্তির নাম বাদ পড়েছে। বাদ পড়া নাগরিকদের মধ্যে প্রায় ১১ লাখ নামই আবার হিন্দুদের বলেও জানা গিয়েছে।
যাদের নাম বাদ পড়েছে তাদের ভবিষ্যৎ কার্যত এখন আঁধারে। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করার পথ খোলা রইলেও সেখানে সাহায্য পাওয়া নিয়ে কেউই খুব একটা আশাবাদী নন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যদিও দিল্লীর রামলীলা ময়দানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন যে দেশে কোনও ডিটেনশন ক্যাম্পই নেই। কিন্তু সেই ডিটেনশন ক্যাম্পের ভয়ই এখন তাদের ভাবাচ্ছে দিন-রাত।