পরিকল্পনা গুজরাতের পোরবন্দর থেকে শিলিগুড়ি হয়ে আসামের শিলচর পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার লম্বা এক মহাসড়ক তৈরির। অথচ জমিজটের ফাঁপড়ে আটকে কাজ। এবার ওই পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কের থমকে থাকা কাজ ফের চালুর জন্য জমিদাতাদের সঙ্গে সঙ্ঘাতে না গিয়ে তাঁদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার পথেই হাঁটতে চায় রাজ্য সরকার। এ নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব।
প্রসঙ্গত, ক্ষতিপূরণের মামলায় ফুলবাড়ির জমিদাতাদের পক্ষেই গিয়েছে আদালতের রায়। সেই সঙ্গে ঘরবাড়ি সরানো সংক্রান্ত মামলাতেও জমিদাতাদের পক্ষেই রায় হয়েছে। তবে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। যে কারণে আবারও এই পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কের কাজ পিছিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই জট কাটাতে এবার নিজের উদ্যোগী হলেন মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, গুজরাতের পোরবন্দর থেকে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার লম্বা এই মহাসড়ক শিলিগুড়ির কাছ দিয়ে আসামের শিলচর পর্যন্ত যাবে। ঘোষপুকুর থেকে ফুলবাড়ি, ধুপগুড়ি, ফালাকাটা, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের পথে ১৫৫ কিলোমিটার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। অথচ এই পথে কয়েক জায়গায় জমিজটে কাজ আটকে রয়েছে। একটি ধাপে মহানন্দা ব্যারেজ থেকে আমাইদিঘি হয়ে জিয়াগঞ্জ পর্যন্ত সমস্যা হয়।
ওই এলাকায় জমি মিললেও দেখা গেছে, বাজারদরের তুলনায় অনেক কম হারে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এখানে ১৫০ জনের মধ্যে ৩০ শতাংশ জমিদাতা ক্ষতিপূরণ পেলেও ঘরবাড়ি সরানোর জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলায় গিয়েছেন। বাকি ৭০ শতাংশ জমিদাতা বাজারদরে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলায় যান। তারা জানান, সবাই জমি দিতে প্রস্তুত। কিন্তু জমির বাজারদর মিলছে না।
এই সড়ক নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকরা এবার পর্যটনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে বৈঠকে তিনি বলেন, ‘এশিয়ান হাইওয়ে এবং আবাসন দফতর জমি নেওয়ায় আগেও একবার ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন এখানকার বাসিন্দারা। আর তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়তে চান না। তাই বাজার দরে যাতে দাম দেওয়া হয় সে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।’
তিনি এ কথাও বলেন যে, ‘বিষয়টি যেহেতু হাইকোর্টে গিয়েছে তাই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে আমার দাবি মামলাগুলো তাড়াতাড়ি মিটিয়ে ফেলা হোক। এ ব্যাপারে সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে আমরা কথা বলব। আমরা চাই রাস্তাটি দ্রুত চালু হোক।’ একইভাবে ধুপগুড়ি থেকে ফালাকাটা পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ১০ কিলোমিটারে সমস্যা রয়েছে। সেখানে ৬ কিলোমিটার পথের ঝামেলা নিয়ে নিজে জমিদাতা এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন গৌতম দেব।