পুরভোটের রণকৌশল ঠিক করতে গত মাসেই তপসিয়ার তৃণমূল কংগ্রেস ভবনে বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই পুরভোটকে সামনে রেখে জনসংযোগ কর্মসূচী বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই মতই জনসংযোগের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করতে চলেছে তৃণমূল। ‘দিদিকে বলো’র পর ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের দ্বিতীয় উদ্ভাবনের সূচনা করতে চলেছেন মমতা। প্রথমটি ছিল শাসক দলের সঙ্গে আম জনতার প্রত্যক্ষ সংযোগ বাড়ানো। এবার রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের নিবিড় প্রচারে কর্মসূচী চালু হবে।
আগামী ২ মার্চ দুই দফায় সাংগঠনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই ওই অভিনব প্রচারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবেন দলনেত্রী স্বয়ং। জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে সকাল দশটায় এই কর্মসূচীর সূচনা করবেন ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। সেখানে শুধুমাত্র বিধায়ক ও সাংসদরা উপস্থিত থাকবেন। পরে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের বাকি জনপ্রতিনিধি থেকে, ব্লক স্তরের নেতা থেকে শাখা সংগঠনের বাছাই করা প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী।
দিদিকে বলো-র সাফল্যের ওপরেই নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। সূত্রের দাবি, এই নতুন কর্মসূচীর নাম ‘বাংলার গর্ব’। রাজ্যবাসীর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব পর্যায়ে কোনও না কোনও সামাজিক সহায়তা প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর সেইসব প্রকল্পের প্রচারে ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। পিকের সমীক্ষায় তারই ইঙ্গিত মিলেছে। অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য উপভোক্তার কাছে সরকারি প্রকল্পের সঠিক খবরটুকুই পৌঁছয়নি। পাশাপাশি বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রের শাসক দলের প্রচারেও বিভ্রান্তি তৈরি হয়। বাংলার এই উন্নয়নমুখী পরিচিতিকে অস্ত্র করেই নতুন কর্মসূচী বাংলার গর্ব।
রাজ্যের শতাধিক পুরসভার ভোট আসন্ন। তার রেশ কাটতে না কাটতেই আগামী বছরের মে মাসে রাজ্য বিধানসভার ভোট। গত লোকসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করেই দলের জনসম্পর্কের খামতি টের পেয়েছিলেন মমতা। ‘মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যান, প্রয়োজনে দাওয়ায় গিয়ে বসুন’গোছের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। নিয়োগ করেছিলেন পিকের সংস্থাকে। তাদের পরামর্শ মেনে গত বছর জুলাইতে শুরু হয়েছিল ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচী। একদিকে সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগের বিহিত করা, অন্যদিকে দলের জনপ্রতিনিধিসহ নেতাদের ওপর নজরদারি চালানো ছিল ওই কর্মসূচির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।