প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সন্ধেয় দেশপ্রিয় পার্কের ভাষা স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান মুখ্যমন্ত্রী। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ওই মঞ্চ থেকে ভাষা শহিদদের প্রতি নিজের শ্রদ্ধা জানিয়ে আজকের পটভূমিতে মাতৃভাষার গুরুত্বের কথা আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার বাংলা ভাষা, তেমনটাই মনে করেন মমতা।
আর এই প্রসঙ্গেই নাম না করে তুলে আনলেন সিএএ-এনআরসি প্রসঙ্গ। বললেন, মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখতে হলে, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ভাষা শুধু একটা যোগাযোগের মাধ্যমই নয়, একটা আবেগও। যে আবেগ একতা শেখায়, সম্প্রীতির বাঁধন বাঁধতে শেখায়।
দেশ যদি এক থাকে, তবেই ভাষাদিবস সার্থক হবে। শুক্রবার দেশপ্রিয় পার্ক ভাষাদিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দেশকে ভাগ করার চেষ্টা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
https://www.facebook.com/ekhonkhobor18/videos/196309131723166/
ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান থেকে মমতা আরও বললেন, “মাতৃভাষার সম্মান বজায় রাখার জন্য দেশমাতাকে রক্ষা করা জরুরি। আসুন, সকলে একসঙ্গে মায়ের আঁচলের নিচেই নিরাপদ আশ্রয়ে থাকি। দেশ অখণ্ড থাকুক, অটুট থাকুক বঙ্গভূমি। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে লড়াই করব। সে লড়াই যতই কঠিন হোক না কেন।” সংক্ষিপ্ত এই বার্তাতেই তিনি ধর্মের নামে বিভাজন তৈরির চক্রান্তের দিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত করে বিরোধী ঐক্যকে রক্ষার কথা বললেন।
তাঁর কথায়, “সব ধর্ম,সব বর্ণ, সব জাতিকে নিয়ে চলতে হবে। মা কি কখনো সাদা আর কালো হয়? সে কি কখনো ছোট বা বড় হয়? তার কি কখনো হাত কিংবা পা বাদ দেওয়া হয়? জন্মভূমি মাতৃভূমি। দেশমাতা তো ভূমিকন্যা। সেই দেশমাতা সবাইকে এক করে রাখে। মাকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিয়ে তার আঁচল টেনে ফেলে দিয়ে মাকে ভালো রাখা যায় না। আমরা তাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে শপথ নিই, আমরা ঐক্যবদ্ধ ভারত দেখতে চাই। আমরা ঐক্যবদ্ধ বঙ্গভূমি চাই।”
এদিনের অনুষ্ঠান থেকে বেশ কয়েকটি ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন যে আর্ট কলেজের প্রাক্তন মডেল, যাঁরা এখন আর কাজ করতে পারেন না, এরকম ১৫ জনকে বেছে তাঁদের পেনশন চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। মাসিক দেড় হাজার টাকা করে পাবেন তাঁরা। এনআরসি-কে সামনে রেখে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে যে শিল্পীরা ছবি এঁকেছিলেন, তাদের অনুরোধেই মুখ্যমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্ত।