আজ অমর একুশ। আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির আবেগ এই ভাষা। বিশ্বের অন্যতম মিষ্টি ভাষা বাংলা। সারা বিশ্বে সমাদৃত এই ভাষা। কিন্তু হায়! সম্মান কি আমরা করি আদৈ! ভাবনার বিষয়। আসলে ঘটনা কালকের। যার জেরে বহুদিন পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখর কবীর সুমন। লজ্জায়, আত্ম ধিক্কারে ম্রিয়মাণ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই শিল্পী।
ভাষা দিবসের আগের দিন তাঁকে বেসরকারি এফএম চ্যানেল থেকে এক অল্পবয়সী আরজে ফোনে বিনীত অনুরোধ জানান, ‘বাংলা ভালোবাসাও না, বাংলা ভালো ভাষাও না’—এর ওপরে কিছু বলতে। অনেক বাঙালি তারকাই নাকি অনায়াসে তাঁদের মত জানিয়েছেন! কবীর সুমনও সেই অনুযায়ী তথাকথিত তারকা। তাই তিনিও যদি কিছু বলেন।
এরপরই বাংলাকে ভালোবেসে, ভাষার প্রতি একুশের বাঙালির ঘৃণামিশ্রিত অনুকম্পাকে তীব্র ব্যঙ্গ করে ফেসবুকে লাইভ হন সুমন। তিনি যা বলেন, তাতে সত্যিই কষাঘাত। আত্মগ্লানিতে ভেঙে পড়ে কবীর সুমন বলেন, ভাষা দিবসের দিন বাংলায় খেয়াল গাইবেন বলে রেওয়াজে বসেছিলেন তিনি। কিন্তু এই ফোন তাঁর অস্তিত্ত্বকে মিশিয়ে দিল। ভাষা দিবসের আগের দিন এক বাঙালি তাকে মত জানাতে বললেন, তাও এমন এক বিষয়ে। তিনি জানান, বাংলার পীঠস্থান বলে যে শহরকে নিয়ে এত গর্ব বাংলা, বাঙালির সেই শহরের বাঙালির মুখে এ কী কথা! লজ্জায় তিনি মুখ লুকোবেন কোথায়!
যার গানে বাংলা, প্রাণে বাংলা, যিনি এক লহমায় বলেন, এই শহর জানে আমার প্রথম সব কিছু, যিনি চান সাঁওতাল তার নিজের ভাষায় রাষ্ট্রপুঞ্জে কথা বলবেন৷ তার কাছে এই ভাষার কি আবেগ তা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পরে না।
তাই ভাষাদিবসের সকালে কবীর সুমন নতুন করে প্রণাম জানান ভাষা আন্দোলনে শহীদ বাংলাদেশের আবদুল জব্বার, শফিউর রহমান, আবদুল সালামকে। ঋণ স্বীকার করেন, ৫২ বছর ধরে বাংলা ভাষাকে নিজের রক্ত দিয়ে মায়ের সম্মান দেওয়ার জন্য।