ক্রিকেট মাঠে টেনিস বল নিয়ে প্র্যাকটিস খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বা ঋদ্ধিমান সাহাকে বহুবার দেখা গিয়েছে ক্ষিপ্রতা বাড়ানোর জন্য টেনিস বলে অনুশীলন করতে। এবার মোহনবাগান অনুশীলনেও ধরা পড়ল সেই একইরকম ছবি। প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসা টেনিস বল শরীর ছুড়ে বাঁচাচ্ছেন শিল্টন পাল, শঙ্কর রায়েরা। কয়েক ফুট দূর থেকে টেনিস র্যাকেট দিয়ে একের পর এক বল মেরে চলেছেন গোলরক্ষক কোচ দীপঙ্কর চৌধুরী।
মোহনবাগান গোলরক্ষকদের টেনিস বলে অনুশীলনের রহস্য কী? শিল্টন বলছিলেন, ‘ক্ষিপ্রতা বাড়ানোর জন্যই মূলত আমরা এই ধরনের অনুশীলন করি। টেনিস র্যাকেট দিয়ে মারার জন্য গতি খুব বেশি থাকে। দ্বিতীয়ত, দৃষ্টিশক্তির প্রখরতা বাড়ানোর জন্যও এই অনুশীলন অত্যন্ত জরুরি।’ আই লিগে মোহনবাগানের এক নম্বর গোলরক্ষক শঙ্কর রায় বললেন, ‘ক্ষিপ্রতা বাড়াতে পিয়ারলেসে খেলার সময় থেকেই এই অনুশীলন করছি।’
টেনিস বলে গোলরক্ষকদের অনুশীলন অবশ্য নতুন নয় বিশ্ব ফুটবলে। কেইলোর নাভাস, ইকের ক্যাসিয়াস থেকে থিবো কুর্তোয়া— প্রত্যেকেই ক্ষিপ্রতা বাড়াতে এই ধরনের অনুশীলন করেন। ভারতীয় ফুটবলেও এখন গোলরক্ষকদের টেনিস বলে অনুশীলন করানো শুরু হয়ে গিয়েছে। জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক তনুময় বসু বলছিলেন, ‘আমরা যখন খেলতাম, তখন গোলরক্ষক কোচ থাকতেন না দলে। তাই আমরা কখনও টেনিস বলে অনুশীলন করার সুযোগ পাইনি। ক্ষিপ্রতা বাড়ানোর জন্য আমি নিয়মিত ছেলেদের টেনিস বলে অনুশীলন করাচ্ছি।’ তিনি যোগ করেন, ‘টেনিস বল এমনিতেই আকারে অনেক ছোট। তার উপরে র্যাকেট দিয়ে মারলে প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসে। ফলে শেষ মুহূর্তে চোখে পড়ে। ক্ষিপ্র না হলে বল ধরা যায় না।’ তিনি যোগ করেন, ‘টেনিস বলে অনুশীলন করানোর আরও একটা উদ্দেশ্য হল, শরীরের ভারসাম্যের উন্নতি ঘটানো। কারণ, বলটা ধরার জন্য কোন দিকে ঝাঁপাতে হবে, সেই সিদ্ধান্তটা শেষ মুহূর্তে নিতে হয়। ভারসাম্য ঠিক না থাকলে বল ধরা সম্ভব নয়।’
এদিকে, অনূর্ধ্ব-১৭ ভারতীয় দলের গোলরক্ষক কোচ অভিজিৎ মণ্ডল ক্রিকেটারদের উদাহরণ দিয়ে বললেন, ‘অস্ট্রেলিয়া বা ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে যাওয়ার আগে ভারতীয় দলে ক্রিকেটারেরা টেনিস বল জলে ভিজিয়ে অনুশীলন করেন। কারণ, ভেজা বল মাটিতে পড়ে প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসে। গোলরক্ষকেরাও এই কারণে এখন টেনিস বলে অনুশীলন করছে।’ তবে এই অনুশীলনে মোহনবাগান গোলকিপারদের কতটা উন্নতি হবে, তা খেলার মাঠেই দেখা যাবে।