সোমবার বিধানসভায় ২০২০-২১ সালের রাজ্য বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। স্বাভাবিকভাবেই উন্নয়নের লক্ষ্যে দরাজ ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছে অর্থমন্ত্রীকে। বাজেট বক্তৃতায় বেকার সমস্যার কথা তুলে ধরে তাঁর দাবি, ‘বাংলায় বেকারত্বের হার ৪০% কমেছে। অথচ গোটা দেশে বেকারত্বের হার গত ৪৫ বছরে সবচেয়ে খারাপ।’ এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে দু’টি প্রকল্পের ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী।
রাজ্য সরকারের বাজেটের ভূয়সী প্রশংসা করেছে বণিক মহল। এই বাজেটকে জনমুখী আখ্যা দিয়েছে তারা। পাশাপাশি রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাজেট বিশেষ ভূমিকা নেবে বলেও বণিক মহলের আশা।
সোমবার ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের (ICC) প্রেসিডেন্ট ময়ঙ্ক জালান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কর্মসংস্থানের স্বার্থে বাজেটে আগামী ৩ বছরে রাজ্যজুড়ে ১০০টি নতুন MSME পার্ক তৈরির প্রস্তাবকে চেম্বার স্বাগত জানাচ্ছে। এ ছাড়া তরুণদের সহজ শর্তে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা বেকার সমস্যার সমাধানে ইতিবাচক পদক্ষেপ। পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া বর্গের পরিবার, SC এবং ST-দের জন্য রাজ্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পকে চেম্বার সাধুবাদ জানাচ্ছে। সেইসঙ্গে বিরোধের মিমাংসা প্রকল্পকেও ICC স্বাগত জানাচ্ছে। এই পদক্ষেপে রাজ্যে ব্যবসা করা আরও সহজ হয়ে উঠবে।’
একইসঙ্গে এই বাজেটের প্রশংসা করেছেন ভারত চেম্বার অফ কমার্সের প্রেসিডেন্ট রমেশ কুমার সারাওগি। এই বাজেটকে ভারসাম্য আখ্যা দিয়েছেন তিনি। এই বাজেট একদিকে রাজ্যে যেমন নয়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে একইভাবে রাজ্যের সমস্ত অংশের মানুষ এর সুফল পাবে বলে তাঁর আশা।
বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য ‘কর্মসাথী’ প্রকল্পের প্রস্তাব করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ৩ বছরে ফি বছর এক লাখ করে যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান করা হবে বলে জানান তিনি। অমিত জানান, এই প্রকল্পের সহজ শর্তে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। যে টাকা দিয়ে ছোট শিল্প বা ব্যবসা শুরু করা যাবে। এই প্রকল্পের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অমিত।
‘কর্মসাথী’ প্রকল্পের পাশাপাশি ‘বাংলাশ্রী’ প্রকল্পেরও ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে জোর দেওয়ার জন্য পয়লা এপ্রিল থেকে ‘বাংলাশ্রী’ নামে নতুন উত্সাহ প্রকল্প চালু করার ঘোষণা করছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য নতুন ক্ষুদ্র শিল্প ও কর্মসংস্থানের প্রচুর সুযোগ সৃষ্টি হবে।’ এই প্রকল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।