এনআরসি-সিএএ-এনপিআর নিয়ে প্রথম থেকেই সরব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন যে, বাংলায় এনআরসি হতে দেবেন না। কার্যকর করা হবে না সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনও। তার সুরে সুর মিলিয়েই কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, পাঞ্জাবের অমরিন্দর সিং, মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ, উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমাররা জানিয়ে দেন যে তাঁরাও নিজেদের রাজ্যে এনআরসি হতে দেবেন না। এবার নিজের রাজ্যে এনআরসি করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও। তাঁর যুক্তি, এনআরসি হলে সব ধর্মের ওপর প্রভাব পড়বে। হিন্দুদেরও নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে।
শিবসেনা মুখপত্র ‘সামনা’য় উদ্ধবের একটি সাক্ষাৎকার বেরিয়েছে। সেখানে শিবসেনা প্রধান বলেছেন, ‘সিএএ ভারতীয় নাগরিকদের দেশ থেকে তাড়ানোর জন্য নয়। কিন্তু এনআরসির প্রভাব থেকে হিন্দুরাও বাঁচবে না। পড়শি দেশে অত্যাচারিত হয়ে সেখানকার কতজন সংখ্যালঘু এ দেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন, ভারতের তা জানার অধিকার আছে। তাঁরা কি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় বাড়ি পাবেন? তাঁদের সন্তানদের কর্মসংস্থান, শিক্ষার কী হবে? এগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের জানার অধিকার আছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমায় জানতে হবে এই লোকগুলিকে আমার রাজ্যের কোথায় পুনর্বাসন দেওয়া হবে।’
তাঁর সাফ কথা, ‘আমাদের নিজেদের লোকজনেরই মাথা গোঁজার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। ওই লোকগুলি কি দিল্লী, বেঙ্গালুরু বা কাশ্মীর যাবেন? কাশ্মীরে তো এখন ৩৭০ ধারাও রদ হয়েছে। এনআরসির প্রভাব হিন্দু-মুসলিম সবার ওপরই পড়বে। এখানে চালু করতে দেব না।’ সম্প্রতি সিএএ-এনআরসির পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে এমএনএস প্রধান রাজ ঠাকরেকে। সামনায় তাঁকে বিঁধে উদ্ধব বলেন, ‘এনআরসি কার্যকর হলে তাঁর সমর্থকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। মুখ্যমন্ত্রী হই বা না হই, কারও ওপর অবিচার হতে দেব না।’ পাক বংশোদ্ভূত গায়ক আদনান সামিকে পদ্মশ্রী দেওয়া নিয়েও কেন্দ্রকে তুলোধোনা করেছেন শিবসেনা প্রধান। নাম না করে তিনি বলেন, ‘একজন অভিবাসী কিন্তু অভিবাসীই। তাঁকে পদ্ম পুরস্কারে ভূষিত করা যায় না।’