প্রায় দেড় মাস ধরে লাগাতার গণআন্দোলনের কাছে কিছুটা হলেও নতিস্বীকার করতে হল রাষ্ট্রকে। শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হল কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবার বাজেট পেশের আগে এক টুইটে এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। প্রসঙ্গত, প্রায় ৫০ দিন ধরে চলছে দিল্লীর শাহিনবাগের এই আন্দোলন।
শনিবার সকালে ট্যুইট করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ বলেন, ‘সরকার শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তবে এই আলোচনা গঠনমূলক পদ্ধতিতে হতে হবে। নরেন্দ্র মোদী সরকার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে সিএএ সম্পর্কে তাদের মনের যাবতীয় ভয় ও সংশয় দূর করতে চায়।’ ওই টুইটের সঙ্গে তিনি তাঁর একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিয়োও পোস্ট করেন, যেখানে তিনি ওই একই কথা বলেছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বর মাসে সংসদে সিএএ বিল পাশ হওয়ার পর থেকেই আন্দোলনে বসেন দিল্লীর মানুষ। ১৫ ডিসেম্বর থেকে দিল্লীর শাহিনবাগে শুরু হয় অহিংস অবস্থান ধর্না। গান, আবৃতি, কবিতা, পথ নাটিকা, গ্রাফিতি বা পোস্টার সহযোগে চব্বিশ ঘণ্টাই চলে এই আন্দোলন। শাহিনবাগের এই গণ আন্দোলনের কথা জায়গা করে নেয় বিশ্বের সবকটি বড় সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে। স্বাধীনতার পরে ভারতে এত বড় গণ আন্দোলন হয়নি বলেই দাবি আন্দোলনকারীদের। শাহিনবাগের ধাঁচে আরও গণ আন্দোলন শুরু হয় মুম্বই, কলকাতা, বেঙ্গালুরুর মতো বড় শহরগুলিতে।
স্বাভাবিকভাবেই এই অহিংস আন্দোলনের ফলে চাপে পড়ে যায় কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারি তরফে কোনও কিছু না বলা হলেও, প্রকাশ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুররা এই আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। অনুরাগ ঠাকুর তো আবার বিক্ষোভকারীদের পরোক্ষে গুলি করার নিদানও দিয়েছিলেন। এরই মাঝে ৩০ জানুয়ারি এক নাবালক বন্দুক হাতে চড়াও হয় আন্দোলনকারীদের ওপর। তার ছোঁড়া গুলিতে আহত হন এক আন্দোলনকারী। আর এই গোটা ঘটনার সময় দূরে দাঁড়িয়ে ছিল দিল্লী পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে সরকারের বিরুদ্ধে আরও আক্রমণের সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা চাপে কেন্দ্রীয় সরকার। এই মাঝে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্করের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলা নিয়ে টুইট, নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ।