জেলা হাসপাতাল বদলে গেল মেডিক্যাল কলেজে। অথচ জানানই হল না রাজ্য সরকারকে। বিজেপির রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষকে চিঠি দিয়ে ‘সুখবর’ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। প্রত্যাশিতভাবে নবান্নের প্রশ্ন, রাজ্যকে এড়িয়ে একটা দলের সভাপতিকে কীভাবে চিঠি দিল কেন্দ্র?
জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে রূপান্তরিত করা হচ্ছে, এই মর্মে দিলীপ ঘোষের কাছে চিঠি দেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় দিলীপ ঘোষজি, আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত করার অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। আমার আশা, আপনার পারদর্শী নেতৃত্বে ওই অঞ্চলের মানুষকে উপযুক্ত চিকিত্সা পরিষেবা দিতে পারবে এই কলেজ। স্বাস্থ্যকর ও উন্নত ভারত গড়ার পথও নিশ্চিত করবে। মেডিক্যাল কলেজের প্রাথমিক কাজে আপনার সহযোগিতা পাওয়ার আশা করছি।’
‘বিতর্কিত’ ওই চিঠির বয়ান নিয়েও চলছে তোলপাড়। কারণ, ২৩ জানুয়ারির ওই চিঠির বয়ানে তাঁরই দলের নেতা দিলীপবাবুর যোগ্য নেতৃত্বে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে এলাকাবাসীর যাবতীয় আকাঙ্খা কলেজটি পূরণ করতে পারবে—এমন কথা বলে আশাপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মেডিক্যাল কলেজটি দ্রুত চালুর জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন দিলীপবাবুর ‘সহযোগিতাপ্রার্থী’ বলেও বয়ানে উল্লেখ রয়েছে। এমন কথা বিতর্ককে আরও উস্কে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, দিলীপ ঘোষ জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের সুপার বা অধ্যক্ষ নন। এমনকী তিনি কোনও পদাধিকারীও নন। একটি মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে দিলীপবাবুর ‘যোগ্য নেতৃত্ব’-এর সম্পর্ক ঠিক কী, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। রাজ্য সরকারের শীর্ষ সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন কোনও চিঠি মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাননি। পায়নি স্বাস্থ্যভবনও।
স্বাভাবিকভাবেই হর্ষবর্ধনের ওই চিঠি নিয়ে ঘোলা হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। নবান্নের দাবি, তাদের ওই চিঠি পাঠানো হয়নি। অথচ এটা আগে রাজ্য সরকারকে জানানোর কথা। এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, এ ব্যাপারে অন্ধকারে রাখা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। কোনও চিঠি দেয়নি স্বাস্থ্যমন্ত্রক। চন্দ্রিমা আরও বলেন, ‘জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত করতে দীর্ঘদিন আগেই প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু রাজ্যকেই কিছু জানানো হল না।’