এনআরসি-সিএএ-এনপিআর নিয়ে প্রথম থেকেই সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি এই ইস্যুতে বেশ কয়েক বার তাঁকে পথে নামতে দেখেছে কলকাতা। পাশাপাশি, জেলায় জেলায় পদযাত্রা করে কেন্দ্রের এই জনবিরোধী নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে তৎপর হয়েছেন তিনি। সেই প্রতিবাদের আঁচকে পাহাড়ে ছড়িয়ে দিতেই সিএএ-বিরোধী পদযাত্রা-সহ একগুচ্ছ কর্মসূচী নিয়ে সোমবার ৫ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত গোর্খাদের মনে ভরসা জোগাতে আজ, বুধবার সফরের তৃতীয় দিনে দার্জিলিংয়ে পদযাত্রা করবেন রাজ্যের মমতা। তৃণমূল কর্মীরা তো বটেই, সেইসঙ্গে বিনয় তামাংদের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, পাহাড়ের ১৬টি জনজাতি উন্নয়ন বোর্ডের সমর্থকেরাও আজ পা মেলাবেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।
ইতিমধ্যেই পাহাড় ছেয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি এবং এনআরসি বিরোধী পোস্টারে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভানু ভবনের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হবে। নেহরু রোড ধরে পদযাত্রা সোজা কাকঝোরায় যাবে। সেখান থেকে পদযাত্রা ফিরে আসবে দার্জিলিংয়ের মোটর স্ট্যান্ডে। সেখানে আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে এই প্রথম পাহাড়ে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছেন মমতা। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর এই কর্মসূচিকে ঘিরে পাহাড়ের আমজনতার মনে প্রবল কৌতূহল। গাড়ি-নির্ভর পাহাড়ে জনতার ভিড় সামাল দিতে ইতিমধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে দার্জিলিংয়ের নানা এলাকায় পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আসামের নাগরিকপঞ্জী থেকে লক্ষাধিক গোর্খার নাম বাদ যাওয়ার পর বিজেপি ছাড়া পাহাড়ের আর কোনও রাজনৈতিক দলই সিএএ, এনপিআর এবং এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানকে সমর্থন করছে না। বরং এসব বাতিল করার দাবিতে মমতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলন ক্রমেই বাড়িয়ে চলেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ধর্না, অবস্থান আর মিছিলে সরগরম এখন গোটা পাহাড়। বিজেপি তথা কেন্দ্র বিরোধী এই বাতাবরণের মধ্যে আজ, বুধবার পাহাড়ে ওই তিনটি ইস্যুতে মিছিলে হাঁটবেন মমতা। রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি তাই আজ ওই মিছিলে অংশ নেবেন পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর লোকজন। আসবেন তাঁদের চিরাচরিত পোশাক ও বাদ্যযন্ত্র সহকারে। সব মিলিয়ে মমতার মিছিল ঘিরে পাহাড়জুড়ে এখন মোদী বিরোধী উন্মাদনা তুঙ্গে উঠেছে।