লোকসভা ভোটে রাজ্যের বিভিন্নপ্রান্তে তৃণমূলস্তরে গেরুয়া ও লাল পতাকা মিশে একাকার গিয়েছিল। খোদ শাসক দলের নেত্রীই সিপিএমের বিরুদ্ধে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। এবার পুরভোটেও শোনা যাচ্ছে বাম-বিজেপি আঁতাতের কথা। আর এই কথা শুনে রাজনৈতিক মহল বলছে তাহলে এই যে এনআরসি-সিএএ-র বিরুদ্ধে বামেরা যে সোচ্চার হয়েছে তা কি শুধুই লোকদেখানো?
কলকাতা পুরভোটে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে নিতে আপত্তি নেই সিপিএমের। শনিবার আলিমুদ্দিনে সাংবাদিক বৈঠকে খোলাখুলি বলে দিলেন জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার। একইসঙ্গে পুরভোটে বাম-কংগ্রেস জোট থাকছে বলেও কার্যত স্পষ্ট করেছেন।
শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী বা নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকের ভরসায় থাকতে চায় না সিপিএম। কল্লোলবাবু বলেন,”সমস্ত শক্তিকে জড়ো করব। পঞ্চায়েত ভোটে জনগণ রাস্তায় বেরিয়েছিল। বিজেপির লোকও ছিল।” পঞ্চায়েত ভোটেসিপিএম-বিজেপি কর্মীদের একজোট হতে দেখা গিয়েছে। পুরভোটেও হবে? সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদকের কথায়,”বিজেপি কর্মীরা আসলে আপত্তি নেই।”
পরিসংখ্যান বলছে, সিপিএমের ভোট কমেছে, তা গিয়েছে বিজেপির ইভিএমে। সাধারণত নিচুতলার প্রবণতাই থাকে, শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধী শিবিরের শক্তিশালী প্রার্থীকে ভোট দেওয়া। সিপিএমের জেলা সম্পাদকের মন্তব্যে স্পষ্ট পুরভোটে নিচুতলায় লাল-গেরুয়া আঁতাঁত দেখা গেলে বিস্ময়ের কারণ থাকবে না।
লোকসভা ভোটে যাদবপুর ছাড়া বাকি সব আসনেই জামানত জব্দ হয়েছে সিপিএমের। ২০১১ সালে ক্ষমতা হারানোর পর সবচেয়ে হতশ্রী ফল হয়েছে। নেতারা ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বললেও কাজ হচ্ছে না। বরং রাজ্যে বিরোধী পরিসর দখল করে ফেলেছে বিজেপি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে নিজেদের জায়গা ফেরাতে যেভাবে গেরুয়া শিবিরের শরণাপন্ন হল বামেরা তাকে ছিছিক্কার করছেন অনেকেই।