বিস্ফোরণের এমনই তীব্রতা ছিল যে, উড়ে গিয়েছিল এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ির চাল। এমনকি দেওয়ালে ধরেছিল ফাটল। শুধু এলাকাই না, গঙ্গার ওপারে চুঁচুড়াতেও বেশ কয়েকটি বাড়ির জানালার কাচ ভেঙেছিল, ফাটল ধরেছিল পুরসভা ভবনেও। তবে কোনোক্রমে প্রাণ বেঁচেছিল নৈহাটির গঙ্গাপাড়ের মানুষগুলির। সেই ঘটনার পরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের রাজ্যের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আর সেই কথামতই শুক্রবার নৈহাটির ছাইঘাট ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিল রাজ্য সরকার। এদিন বাড়ির মালিকদের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনের তরফে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৫৬টা পরিবারের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ অনুযায়ী কাউকে ৩৫ হাজার টাকা, কাউকে ২০ হাজার টাকা, কাউকে ১৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তারই অঙ্গ হিসেবে এদিন ৬৫টি পরিবারকে রাজ্য সরকারের তরফে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হল। সরকারি কোষাগার থেকে এদিন ১২ লক্ষ টাকার মতো ব্যয় করা হল। ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে এই চেক তুলে দেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বিধায়ক পার্থ ভোমিক, জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, মহকুমাশাসক আবুল কালাম আজাদ আনসারি, পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর, নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চ্যাটার্জি।
প্রসঙ্গত, গত ৯ জানুয়ারি নৈহাটির ছাইঘাটে বাজেয়াপ্ত করা বাজি, বাজির মশলা ও রাসায়নিক ধ্বংস করতে গিয়ে হয় প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে ওঠে গঙ্গার ওপারের চুঁচুড়াও। বিস্ফোরণের শব্দে মূহূর্তে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় ঘর। নৈহাটির ছাইঘাটে বন্ধ গৌরীপুর জুটমিলের আবাসনে তখন ত্রাহি ত্রাহি রব। ভেঙে পড়ে অ্যাসবেস্টসের ছাদ। দেওয়ালে বড় বড় ফাটল। ঘটনার সময়ে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে শুয়েছিলেন সর্বাণী মণ্ডল। ছাইঘাটের আশপাশের প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা জুড়ে প্রচুর বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়। উড়ে যায় টিনের চাল, ফাটল ধরে দেওয়ালে বা জানালা-দরজার কাচ ভাঙে। এদিন সেই ঘটনার মাত্র ৮ দিনের মাথায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির হাতে। ক্ষতিপূরণ পেয়ে স্বভাবতই খুশি ক্ষতিগ্রস্তরা।