প্রথম একাদশে বড় পরিবর্তন ঘটিয়েও দুর্বল শ্রীলঙ্কাকে তৃতীয় তথা অন্তিম টি-২০ ম্যাচে সহজেই হারাল ‘টিম ইন্ডিয়া’। ৭৮ রানে জেতার পাশাপাশি ভারত সিরিজও পকেটে পুরে ফেলল ২-০ ব্যবধানে। সাধারণত নির্ণায়ক ম্যাচে উইনিং কম্বিনেশন ধরে রাখার চেষ্টা করেন অধিনায়করা। তবে বদল ঘটিয়েই সাফল্য পেল ভারত।
গতকাল ব্যাটিং অর্ডারেও চমক দিল ভারত। তিন নম্বরে নামিয়ে দেওয়া হল সঞ্জু স্যামসনকে। কেরালার উইকেটরক্ষকটি প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতেই উদ্বেলিত হয়ে ওঠে গ্যালারি। কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে সঞ্জু ৬ রানে আউট হয়ে যান। হঠাৎই চার নম্বরে নামেন মণীশ পাণ্ডেকে। তবে সঞ্জুর মতো ভুল করেননি তিনি। মণীশ ১৮ বলে ঝোড়ো ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে বুঝিয়ে দিলেন, বাকিদের থেকে কোনও অংশে কম যান না। মণীশের লড়াইটা মূলত শ্রেয়াসের সঙ্গে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে শ্রেয়স (৪) এদিন বড় রান পেলেন না।
কাল কোহলি দেখালেন ব্যতিক্রম কাকে বলে! বিরাট কোহলি সেদিক থেকে ব্যতিক্রমী। একটা নয়, দু’টো নয়, দলে তিনটি পরিবর্তন করে শুক্রবার মাঠে নেমেছিল কোহলি ব্রিগেড। ঋষভ পন্থ, শিবম দুবে ও কুলদীপ যাদবের জায়গায় খেলানো হল সঞ্জু স্যামসন, মণীশ পাণ্ডে ও যুজবেন্দ্র চাহালকে। আসলে টিম ম্যানেজমেন্ট বুঝে গিয়েছিল, এই ঝাঁঝহীন শ্রীলঙ্কাকে হারানোর জন্য খুব বেশি কসরত করতে হবে না। বিরাট কোহলি টসে হারলেও ম্যাচে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও শিখর ধাওয়ান পাওয়ার প্লে’তে রীতিমতো ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। ওপেনিং জুটিতে তাঁরা যোগ করেন ৯৭ রান। লোকেশ ধারাবাহিকভাবে বড় রান করছেন। টি-২০ বিশ্বকাপে তাঁর জায়গা প্রায় পাকা। তুলনায় চাপ বেশি ছিল শিখরের উপর। কারণ, তৃতীয় ওপেনার হিসেবে তিনি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাবেন কিনা তা তাঁর পারফরম্যান্সের উপরই নির্ভর করছে। তারকারা বরাবরই বড় মঞ্চকে কাজে লাগান। ধওয়ান সঠিক সময়ে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন। ৩৬ বলে সাতটি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে তিনি করলেন ৫২ রান। যা তাঁকে ফের প্রচারের আলোয় তুলে আনল। সমসংখ্যক বল খেলে লোকেশ করেন ৫৪ রান।
ভারত অধিনায়ক শেষ কবে টি-২০ ম্যাচে দেশের জার্সি ছ’নম্বরে ব্যাট করেছেন বলা মুশকিল। একটা সময় মনে হচ্ছিল, তিনি হয়তো আর ব্যাট করবেন না। কিন্তু ১৬ রানের মধ্যে আচমকা ভারতের তিনটি উইকেটের পতন ঘটে। বিরাট নামতেই উদ্বেলিত হয়ে ওঠে গ্যালারি। নতুন ব্যাটিং অর্ডারে বেশ ভালোই মানিয়ে নিয়েছিলেন ভিকে। দু’টি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারিও হাঁকিয়েছেন তিনি। ক্যাপ্টেন হিসাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিরাট দ্রুততম ১ হাজার রানও পূর্ণ করে কীর্তি স্থাপন করলেন। শেষ পর্যন্ত ১৭ বলে ২৬ করে তিনি রান আউট হন। তবে শার্দুল ঠাকুরের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দর্শকরা উপভোগ করেছেন। ব্যাট হাতে ৮ বলে একটি ছক্কা ও দু’টি চারের সাহায্যে ২২ রান করেন ভারতীয় পেসারটি। যার সুবাদে ভারত সহজেই ৬ উইকেটে ২০১ রান খাড়া করে ।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ সেরা নবদীপ সাইনি। ভারতীয় দলে খেলার পর থেকে খাদ্যাভ্যাসে মন দিয়েছেন। বলছিলেন, ‘ ‘গতি আমার অস্ত্র। সেই গতি ধরে রাখতে ফিটনেস ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন জরুরি। এখন সেটাই করছি।’’
ম্যাচের সেরা শার্দূল ঠাকুর বলেছেন, ‘‘বরাবরই ব্যাট করতে পছন্দ করি। ভারতের হয়ে খেলার পর থেকে ব্যাটিংয়ে আরও বেশি মনোনিবেশ করি। এখন আমি আত্মবিশ্বাসী। বোলিংয়ের সঙ্গে ব্যাট হাতেও সফল হতে চাই।’’