সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে গোটা দেশ। এনআরসি-সিএএ-র প্রতিবাদে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ আন্দোলন করছে তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি। শুধু তাই নয়। মোদী সরকারের কাছে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার সামিল হয়েছে এনডিএ শরিকদের উল্টো সুর গাওয়া। এনআরসি-সিএএ ইস্যুতে বিজেপির পাশে নেই প্রথমসারির গুরুত্বপূর্ণ একজন জোটসঙ্গীও। এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়াতেও সিএএ-র সমর্থন বনাম বিরোধের লড়াইয়ে গোহারা হারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্তত ২০১৯-এ তো বটে।
সোমবার টুইটারে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে প্রচার অভিযান শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। হ্যাশট্যাগ ‘ইন্ডিয়া সাপোর্টস সিএএ’তে আধ্যাত্মিক গুরু জাগ্গি বাসুদেব ‘সদগুরু’র ইউটিউব ভিডিও শেয়ার করে তাঁর বক্তব্য শোনার পরামর্শ দিয়েছিলেন মোদী। তার খানিক পরেই পাল্টা চালু হয়েছিল হ্যাশট্যাগ ‘ইন্ডিয়া ডাজনট সাপোর্ট সিএএ’। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ৭ লক্ষ ছুঁয়েছে সেই টুইট। আরও পরে শুরু হয়েছিল ‘ইন্ডিয়া এগেনস্ট সিএএ’। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ভারতে টুইটার ট্রেন্ডিংয়ে এটি ছিল সবার ওপরে। টুইটের সংখ্যা সাড়ে ৮ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। ফলে অনেক পেছনে পড়ে গিয়েছে মোদীর ‘ইন্ডিয়া সাপোর্টস সিএএ’।
এ নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েননি নেটিজেনরা। এক নেটিজেন যেমন ‘ইন্ডিয়া ডাজনট সাপোর্ট সিএএ’ এবং ‘ইন্ডিয়া সাপোর্টস সিএএ’র টুইটের সংখ্যা তুলে ধরে বলেছেন, ‘সরকার পক্ষ পিছিয়ে পড়েছে।’ অন্যদিকে আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় লড়াইয়ে মাঠে নেমে ‘সেমসাইড গোল’ করে বসেছে বিজেপি। মোদীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দলের তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান অমিত মালব্য তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে সিএএ-কে লিখে বসেছেন সিসিএ! সমর্থকেরা তাতেই দিনভর সমর্থন দিয়ে চলেছেন। মালব্য বাংলায় ট্রেন জ্বালানোর একটি ভিডিও আপলোড করে সোমবারই সিএএ-কে সিসিএ লিখে প্রচার শুরু করেন। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৫ লক্ষ সমর্থক টুইট করেছেন ওই হ্যাশট্যাগে।
তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল, মালব্যেরও ধারেকাছে নেই মোদীর প্রচার অভিযানের হ্যাশট্যাগ ‘ইন্ডিয়া সাপোর্টস সিএএ’। এবং গেরুয়া শিবিরের তরফে নতুন আইনের সমর্থনে ভুল বানানই প্রচার পাচ্ছে। অন্যদিকে, মালব্যের ওই বানান ভুল নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই কটাক্ষের ঝড় ধেয়ে এসেছে। কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় মালব্যের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘সিসিএ হল কপি ক্যাট অ্যাসোসিয়েশন’। আবার এক নেটিজেন সিএএ-র সম্পূর্ণ বিরোধিতা করে টুইটারে লিখেছেন, ‘প্যান নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। তবুও আপনি কর দেন। আপনি বায়োমেট্রিক্স দেন, কিন্তু আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। আপনি বিদেশে যান, কিন্তু পাসপোর্ট নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। নির্বাচনে ভোট দেন, কিন্তু ভোটার পরিচয়পত্র নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়।’