কথায় আছে, ‘অতিথি দেব ভব’। কিন্তু বাইরের দেশের অতিথিরা দেশের বিষয়ে নাক গলান, এমনটা একেবারেই পছন্দ নয় মোদী সরকারের। কেরলের কোচিতে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে সেই ছবি ফেসবুকে শেয়ার করার ‘দোষে’ ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নরওয়ের তরুণী জেন-মেট জনসনকে। দেশ না ছাড়লে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। নিজের ফেসবুকে লিখে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন নরওয়ের এই পর্যটক।
নরওয়ের বাসিন্দা জেন মেট জনসন কেরল বেড়াতে এসেছিলেন। ২৩ ডিসেম্বর এনআরসি এবং সিএএ বিরোধী আন্দেোলনের স্বপক্ষে একটি পোস্ট করেন। এরপরই শুক্রবার তাঁর হোটেলে বিদেশি নাম নথিভুক্তকরণ দফতরের আধিকারিক হাজির হন। এ প্রসঙ্গে জেন লেখেন, “আজ সকালে আমার হোটেলে এফপিআরও-এর এক আধিকারিক হাজির হন। তিনি আমাকে এখনই দেশ ছাড়তে বলেন। অন্যথায় আমার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। আমি লিখিত নথি দিতে বলি। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, কোনও লিখিত নথি দেওয়া হবে না।” শেষপর্যন্ত এক বন্ধুর সাহায্যে দুবাই পর্যন্ত বিমানের টিকিট কাটেন। সেখান থেকে সুইডেনে বিমান ধরবেন। ফেসবুকে শেষ পোস্টে জ্যানে জানান, তিনি দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
শুধু দেশ ছাড়ার হুমকি দিয়েই সব শেষ হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত না ওই তরুণীর বাড়ি যাওয়ার টিকিট কাটা হয়েছে, ততক্ষণ হোটেল ছাড়েননি ওই অফিসার। ‘ইমিগ্রেশন ব্যুরোর অফিসার যতক্ষণ না আমার হাতে টিকিট দেখতে পাচ্ছেন ততক্ষণ এখান থেকে যাবেন না বলে জানিয়েছেন। আমার একজন বন্ধু দুবাই থেকে সুইডেন যাওয়ার টিকিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছি।’ এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বলা হয়, ওই তরুণীর ভিসার মেয়াদ লঙ্ঘন করে যাওয়ায় দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তবে এই আচরণ মেনে নিতে না পেরে ভেঙে পড়েছেন জেন। ভারত সফরের বিষয়ে আর কিছুই তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করবেন না বলে লেখেন ফেসবুকে। ‘অভূতপূর্ব ভারত সফর নিয়ে ফেসবুকে আর কিছু পোস্ট করব না। আমার স্মরণীয় এই যাত্রায় যারা যারা পাশে ছিলেন তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু এখন প্রাইভেট হওয়ার সময় এসেছে। সবাইকে এটাও জানাতে চাই যে আমি ঠিক আছি। এখনও কোচিতেই আছি। ঠিক সময়ে দিল্লী চলে যাবো। সবাইকে গুডবাই।’